শবদের হাঁটাচলা
তমাল সাহা

১) রক্ত

শব্দটি খুব কাছেই ছিল
এতদিন কেন
এমন ভাবে ভাবিনি কে জানে?

এখন রক্ত শব্দটি শুনলেই
ঘুম ভেঙে যায়
স্বপ্নে উঠে বসি জাগরণে।

রক্ত শব্দটি নিয়ে ভাবলে
প্রেমিকার আরক্ত মুখটি মনে পড়ে
অনুরক্ত হয়ে চেয়ে থাকি!
মনে মনে রক্তিম ভোরের ছবি আঁকি।

রক্তাক্ত শব্দটি মনে পড়লে
দেখি ভাইয়ের লাশটি মাটিতে পড়ে।
বদরক্ত বয়ে যায় কাদের শরীরে?
রক্ত শব্দটি অযথা বিরক্ত সৃষ্টি করে!

২) ম্যাজিক

মঞ্চে শুভ্রতা ছড়িয়ে পড়ে
এলিড আলোয় উজ্জ্বলতা ছড়ায়
এ কেমন লেডি ম্যাকবেথ!
সাদা শাড়ি নীল পাড়
পায়ে সাধারণ হাওয়াই নীল ফিতে
হেঁটে যায়…

সুভদ্রজন!
শেষ হয়ে আসে বেলা
পিন পতনের শব্দ নেই, শেষ খেলা।

দেখো, আমার দুই হাত
সাফসুতরো পরিষ্কার কিছু নেই
হাত দুটো চলে গেল শরীরের পেছনে।

মিউজিক উঠলো বেজে, ওয়ান টু থ্রি!
দুটি হাত রক্তমাখা চলে এলো সামনে!

৩) রবীন্দ্রানুসরণ

গণতন্ত্রের বেদি রক্তে গিয়েছে ভিজে
এ কেমন পূজারী তুমি!
রক্ত-বসন রক্ত-তিলকে খড়্গহাতে সেজে!

এ কোন পূজা করো তুমি,
যূপকাষ্ঠে দাও নরবলি!
মাটিতে উপুড় হয়ে পড়ে ছিন্নশিরগুলি!

৪) ঝরে

আকাশ ঋতুমতী হলে বৃষ্টি ঝরে
শরতে শিশির ঝরে
অরণ্যে হৈমন্তিকা এলে পাতা ঝরে
ঋতুকাল মানে না
রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসে প্রাণ ঝরে

আর কী কিছু ঝরে?

পোড়াকপালী মায়ের আর্তনাদ
প্রেমিকার বৈধব্যের আঁচল ওড়ে
অশ্রু ঝরে আর ঝরে…

৫) সমাপনী

সমাপন হল গাঙ্গেয় শুদ্ধস্নান।
আমার পরিধানে সাদা ধুতি
মায়ের পরনে সাদা কোরা থান
পেছনে রইলো পড়ে বিশাল শ্মশান।

সামনে মহান গণতন্ত্র, ধন্য!
হে পিতা! তুমি হয়ে গেলে লাশ
করি হাতজোড়, তুমি প্রণম্য!