অবতক খবর,১১ মার্চ: ৭ মার্চ উত্তর চব্বিশ পরগণা জেলা সম্মেলন শুরু হল একটি কলঙ্কজনক ঘটনার মধ্যে দিয়ে। এক পোড়খাওয়া শ্রমিক নেতা বলে কথিত,সেই নেতা লোক সঙ্গীত শিল্পী এবং সঙ্গীত জগতে সুপ্রতিষ্ঠিত শুভেন্দু মাইতিকে প্রকাশ্যে অপমান করলেন। এইসব নেতার অভব্য,ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের কারণেই একটি বামপন্থী দল ক্রমাগত পিছনে হটে যাচ্ছে।

সুভাষ বসু একটি আন্তর্জাতিক নাম। এই শ্রমিক নেতার নাম কে সুভাষ রেখেছিলেন জানিনা। তবে এই ঘটনার পর এই নেতার নামকরণ করেছিলেন যিনি বা যারা তারা নিশ্চিত লজ্জায় মুখ ঢাকছেন।

সিপিএম উত্তর চব্বিশ পরগণা জেলা সম্মেলন শুরু হয়েছে নৈহাটিতে। সেইদিন সেই প্রারম্ভিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লোকসঙ্গীত শিল্পী শুভেন্দু মাইতি। লোক সঙ্গীতকে জনতার কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন। তিনি নৈহাটিতে লালন অ্যাকাডেমির সভাপতি। তিনি বর্তমানে কল্যাণীতে থাকেন এবং লোক সঙ্গীতের প্রসারের জন্য এক বিশাল পরিকল্পনা রচনা করছেন বোলপুরে। এই মানুষটি তরুণ মজুমদারের “ডাক দিয়ে যাই” চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। এই চলচ্চিত্রে সঙ্গীত পরিচালক এবং বরফি চলচ্চিত্রেও সঙ্গীত পরিচালকের কাজ করেছেন।

সিপিএম নেতা নেপাল দেব ভট্টাচার্য বলেন, শুভেন্দু দা সম্মেলনে উপস্থিত হয়েছেন পুরানো বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে দেখা কথবার জন্য। তিনি যখন এসেছেন একটা গান পরিবেশন করবেন না তা হতে পারে না!

এদিন অনুষ্ঠান মঞ্চে তিনি যখন গান গাইতে ওঠেন তখন তিনি মনে করেন যে,একটি বামপন্থী দল তার অনুষ্ঠানের সূচনায় সঙ্গীত পরিবেশন তো করবেই। অর্থাৎ গণসঙ্গীত তো পরিবেশন করবেই নিশ্চিত। সুতরাং সেখানে একটি হারমোনিয়ামও থাকা উচিত।

একটি জেলা সম্মেলনের অনুষ্ঠানের শুরুতে সাধারণত সঙ্গীত পরিবেশন করায় রীতি এবং এতে কর্মীরা অভ্যস্ত। তিনি হারমোনিয়ামের প্রসঙ্গ তুলে বলেন যে কেন একটি হারমোনিয়াম নেই? তখন উপস্থিত এক বড় মাপের শ্রমিক নেতা মুখে দাড়ি, সাধারণ পোষাকে থাকলেও, তিনি উদ্ধত্যপূর্ণ সুভাষিত বাক্য প্রয়োগ করেন। হারমোনিয়ামের কি দরকার? আপনি গাইতে এসেছেন,গেয়ে যান। একে বামপন্থী তার উপর শ্রমিক নেতার মুখে এমন ভাষা শুনে শুভেন্দু মাইতি হতচকিত হয়ে যান। গানের বদলে একটি চার লাইনের কবিতা পড়ে তিনি নেমে যান।

এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিমান বসু সূর্যকান্ত মিশ্র মোহাম্মদ সেলিম সহ অন্যান্য জেলা নেতারা। তারা কিন্তু বিন্দুমাত্র প্রতিবাদ করেননি।

 

একটি বামপন্থী দল যদি সাংস্কৃতিক চেতনা সম্পন্ন না হয়, তাঁকে কি বামপন্থী বলা যায়? আর এই সমস্ত নেতার ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের জন্যই একটি পার্টি ক্রমাগত পিছনের দিকে হতে যাচ্ছে,নিশ্চিত এ কথা বলা যায়। কিন্তু নেতারা কি তা উপলব্ধি করতে পারছেন? হায়রে বাংলার সিপিআইএম!