রাজীব মুখার্জী :: অবতক খবর :: হাওড়া ::    বাড়ির অনুষ্ঠান থেকে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে শ্রোতাদের গানের মাধ্যমে বিনোদন দেওয়া এটাই তাদের আয়ের প্রধান উৎস। সারা বাংলা জুড়ে বিভিন্ন জায়গাতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ডাক পড়ে তাদের। তারা মঞ্চ শিল্পী কিন্তু এই বছরে করোনা আবহে ও লকডাউনের দরুন সেই সমস্ত অনুষ্ঠান এখন বন্ধ। তাই আর্থিক সংকটে এই শিল্পের সাথে জুড়ে থাকা শিল্পীরা। বছরের শুরুতেই এভাবে অনুষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ার দরুন আর্থিক লোকসানে এই শিল্প ও তার সাথে যুক্ত শিল্পীরা এখন চরম সংকটে।

পাশাপাশি রাজ্যে করোনা আবহে বন্ধ রাজ্যের সমস্ত পানশালা। আনলক -১ পর্যায়ে সম্প্রতি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, হোটেল, রেস্টুরেন্ট খুললেও এখনো খোলেনি পানশালা। হাওড়া জেলা তথা রাজ্যে পানশালার সত্যে যুক্ত এই শিল্পীরা এখন আর্থিক সংকটের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।
অল বেঙ্গল মিউজিশিয়ান ও সিঙ্গার এসোসিয়েশনের হাওড়া জেলার ইনচার্জ জানান গত তিন মাস ধরে সমস্ত মঞ্চানুষ্ঠান ও পানশালা বন্ধ। তাই বন্ধ তাদের সমস্ত রোজগারের রাস্তা। অবস্থা এতটাই খারাপ বেশ কিছু শিল্পী তাদের বাদ্যযন্ত্র বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয়েছেন। বেশ কিছু শিল্পী বর্তমানে টোটো চালাচ্ছেন অন্যের থেকে ধার নিয়ে। নিজের টোটো কেনার সামর্থ তাদের নেই। বাড়িভাড়ার টাকা অব্দি দিতে পারছেন না। বাড়ির মালিক তাদের উৎখাত করার জন্য শাসাচ্ছে। ছেলেমেয়েদের স্কুলের ফিজ জমা করতে পারছে না তারা। বাড়িতে বৃদ্ধ পিতা মাতা রয়েছে অনেকের। সব মিলিয়ে তারা নিদারুণ আর্থিক সংকটের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। তাই তারা আবেদন করেছেন সরকারের কাছে তাদের দিকে সরকার একটু নজর দিক কিন্তু সেখান থেকেও কোনো উত্তর তারা পান নি বলেই দাবি করেন তিনি। তিনি এও বলেন কিভাবে সংসার চালাবো সেটাই এখন বড় দুশ্চিন্তার কারণ।

তিনি আরো বলেন শুধু হাওড়া জেলাতেই কয়েক লক্ষ শিল্পী আছেন এবং রাজ্যে সেই সংখ্যা প্রায় আরো বেশি। এরমধ্যে আছেন নন রেজিষ্টার্ড শিল্পী। তাই তারা যদি সরকারি সাহায্য পান তাহলে এই সংকটের সময়ে তারা একটু ভালো থাকতে পারেন।
তিনি আরো অভিযোগ বলেন যেহেতু এখন দেশের অর্থনীতি চাকা ঘোরানোর জন্য শপিং মল, রেস্টুরেন্ট খোলা হয়েছে কিন্তু এখনো রাজ্যের কোনো পানশালা খোলা হয় নি।

পাশাপাশি তিনি বলেন এখন বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অনেক বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। আমন্ত্রিত ব্যক্তির সংখ্যা ৫০ এর বেশি হবে না। তাই তাদের জন্য যদি সরকার একটু ভাবনাচিন্তা করেন তাহলে অনেক শিল্পীর উপকার হবে। তাই তিনি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেন। তাদের মতো শিল্পীদের পাশে যদি সরকার থাকে ও সাহায্য করে তাহলে সেই পরিবার গুলো বেঁচে থাকতে পারবে।

তারা তাদের দুরবস্থার কথা জানিয়ে চিঠি লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী কে। তাদের আশা রাজ্য সরকার যেভাবে অন্যান্য শিল্পে যুক্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে। সেভাবে মঞ্চ ও পানশালার শিল্পীদের পাশে এসে দাঁড়াক সরকার।