অবতক খবর ,সংবাদদাতা,মুর্শিদাবাদ ১৫ই মে :: আজ সারগাছি রামকৃষ্ণ মিশন উচ্চ বিদ্যালয় প্রাক্তনী সংসদ এর সহযোগিতায় এবং সারগাছি রামকৃষ্ণ আশ্রম এর উদ্যোগে রামকৃষ্ণ মিশনের ১২৫ বর্ষ আনুষ্ঠানিক সেবা কার্য উপলক্ষে বেলা সাড়ে দশটায় দুস্থদের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠান শুরু হয়। এই অনুষ্ঠানে সারগাছি রামকৃষ্ণ মিশন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বামী তপোরেস্টানন্দ মহারাজ বলেন আজ থেকে ১২৫ বছর পূর্বে ১৮৯৭ সালের ১৫ই মে অখন্ডনানন্দজি মহারাজ শ্রীরামকৃষ্ণর ১৬ জন পার্ষদ এর মধ্যে একজন হয়েছিলেন। তিনি তিব্বত পর্যন্ত গিয়েছেন কিন্তু মুর্শিদাবাদ তার দেখা ছিল না, উনি দর্শনীয় স্থানগুলি দেখবার জন্য যখন মুর্শিদাবাদে এলেন তখন মুর্শিদাবাদে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ শুরু হয়েছিল।

এই দুর্ভিক্ষ এত প্রকট হয়েছিল সেই সময় এক মুসলিম মহিলার তিনি সাক্ষাৎ পান, সেই মহিলার বাচ্চার কলসি ভেঙে যাওয়ায় সে কান্নাকাটি করছিল। তিনি তখন সেই বাচ্চাটিকে কলসি দিয়ে এবং কিছু পয়সা ছিল তা দিয়ে খাবার কিনে দিয়েছিলেন। তারপর তিনি আরও দেখেছিলেন বেশকিছু বাচ্চা খাবারের অভাবে কান্নাকাটি শুরু করেছে তখন ওনার যা কিছু সয় সম্বল ছিল তা দিয়ে তাদের কিছু খাবার কিনে দেন। তিনি যখন সারগাছি থেকে এগিয়ে আসছিল তখন তিনি দেখলেন চারিদিকে অনাহারে মানুষ কান্নাকাটি শুরু করেছে আহারের জন্য এই মহারাজের কাছে ছুটে চলে আসছেন। তখন তিনি তাদেরকে বলেন যে তার কাছে অবশিষ্ট আর কিছু নেই এবং তিনি তখন ভাবেন যেখানে মানুষ আহার পাইনা সেখানে আমি কি করে ভিক্ষা করে এখানে থাকবো ।

যখন তিনি চলে যাওয়ার জন্য মনস্থির করেন তখন তিনি তিনবার দিব্য বাণী শুনতে পান যে , এখান থেকে কোথায় তুই চলে যাবি, তোর এখানে অনেক কাজ বাকি আছে তারপর তিনি এখানে থেকে চলে যান এবং তিনি চেষ্টা করেন সেখানে কি করতে পারে সে ব্যাপারে চিন্তা করে তিনি ভিক্ষা করতে আরম্ভ করেন। এই ভিক্ষার সম্বল নিয়ে ক্ষুধার্ত মানুষদের সেগুলি দান করেন। তিনি এই মানুষ গুলির মধ্যে ১৮ জনকে চিহ্নিত করেন যারা নিতান্তই গরীব তাদের মধ্যে বড়দেরকে দের পোয়া , মাঝারি যারা আছেন তাদের জন্য এক পোয়া এবং ছোটদের জন্য আধ পোয়া চাল তিনি ওজন করে এই আজকের দিনে সেবা কার্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেন সেই থেকে এই সেবা কার্য যা আজ সারগাছি রামকৃষ্ণ মিশনে রূপান্তরিত হয়েছে। এখানে আরো অনেক অ্যাক্টিভিটি রয়েছে এখানে মানুষ সেগুলি গ্রহণ করে শেখে এবং স্বাবলম্বী হয় বলে জানান স্বামী তপোরেস্টানন্দ মহারাজ।