বিনয় ভরদ্বাজ, অবতক খবর :: দেশের সংসদে বাড়তে থাকা অপরাধীদের সংখ্যায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। সংসদকে অপরাধীকরণ রুখতে রাজনৈতিক দলগুলিকে নির্দিষ্ট ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ জারি করল সুপ্রিম কোর্ট। বিচারকরা তার নির্দেশে বলেছেন যে অপরাধীদের রুখতে রাজনৈতিক দলগুলোকেই পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

বিচারকরা জানিয়ে দিয়েছেন যে, প্রার্থী হিসেবে কাউকে দাঁড় করাতে গেলে তার আগে সোশ্যাল ওয়েবসাইটে অবশ্যই জানাতে হবে তার নামে কোন কোন অপরাধ বা কোন কোন ধারায় মামলা  রয়েছে। শুধু তাই নয় কেন দল তাকে প্রার্থী করছে তার যুক্তিও দেখাতে হবে।

আদালতের বিচারপতিরা জানিয়েছেন যে কাউকে প্রার্থী মনোনীত করার 48 ঘণ্টার মধ্যে ওয়েব সাইটে সোশ্যাল মিডিয়ায় বা অন্যান্য সংবাদপত্রে জানিয়ে দিতে হবে তার নামে কোন কোন ক্রিমিনাল কেস আছে আর শুধু তাই নয় প্রার্থী মনোনয়ন 72 ঘণ্টার মধ্যে নির্বাচন কমিশনের কাছেও তাদের এই অপরাধের তালিকা পাঠিয়ে দিতে হবে। বিচারপতিরা জানিয়েছেন যদি কোন দল তা না করে তাহলে কোর্টকে অবমাননার মামলা তার বিরুদ্ধে হতে পারে।

উল্লেখ্য 2014 সালে ক্ষমতায় আসার আগে নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদী দেশকে ভরসা দিয়েছিলেন যে তারা সংসদকে অপরাধী থেকে বাঁচাবেন ও কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন কিন্তু নির্বাচনে দেখা যায় বিজেপি অপরাধে লিপ্ত সাংসদ নির্বাচিত প্রার্থী ঘোষণা করে 2014 তে 539 জন নির্বাচিত প্রার্থীদের মধ্যে 233 জন সাংসদের বিরুদ্ধে অপরাধের মামলা ঝুলছে।

চিন্তার বিষয় যে 2009 সালে সংসদে 543 জনের মধ্যে 162 জন সাংসদ অপরাধের মামলায় অভিযুক্ত ছিলেন যেটা 2014 তে নির্বাচনে এসে 185 হয়ে যায় আর 2019 আসতে আসতে সেটা সংখ্যা বাড়তে বাড়তে 233 পৌঁছে গেছে । সংসদীয় গণতন্ত্রে যেটা খুবই চিন্তাজনক বিষয়।

উল্লেখ্য সাংসদদের অপরাধ মুক্ত করার লক্ষ্যে আইনজীবী অসীম কুমার উপাধ্যায় ও অন্যান্যদের করা একটি মামলায় সুপ্রিম কোর্টের 2018 সালের সেপ্টেম্বরে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিল যে অপরাধীরা যাতে নির্বাচনে না দাঁড়াতে পারে তার জন্য যেন আইন তৈরি করে কিন্তু কেন্দ্র কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।

আইনজীবী অশ্বিন কুমার উপাধ্যায় বলেন যে কেন্দ্র সরকার বা নির্বাচন কমিশন কেউই কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। নির্বাচন কমিশন আদালতে দাঁড়িয়ে জানিয়েছিল যে প্রার্থীদের অপরাধের তালিকা আগেভাগে প্রকাশ করে কোন লাভ নেই বরং আদালত এমন নির্দেশ দিক যাতে এরকম অপরাধের মামলায় লিপ্ত কোন প্রার্থী নির্বাচনে না দাঁড়াতে পারে।

সরকারের পদক্ষেপ ও নির্বাচন কমিশনের রিকমেন্ডেশন মেনে আজ সুপ্রিম কোর্ট নতুন ব্যবস্থা গ্রহণ করলো। বিচারপতিরা তাদের নির্দেশে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, এবার থেকে নির্বাচনে কোনো অপরাধ মামলার সাথে যুক্তদের যদি কোন রাজনৈতিক পার্টি প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে তাদের বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে ও পাশাপাশি জানাতে হবে যে তারা কেন সেই প্রার্থীকে বেছে নিয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশে সংসদ কিছুটা হলেও অপরাধী মুক্ত হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।