অবতক খবর :: মোথবাড়ি ::   গোটা গ্রামের রাস্তা বাঁশের ব্যারিকেড করে আটকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। যাতে গ্রামের বাইরের কেউ আসতেও পারবেন না, এমনকী গ্রামের কেউ বাইরে যেতেও পারবে না। গেলে একাকী যেতে হবে। তাও আবার পায়ে হেঁটে। গ্রামে সব রকম যান চলাচল বন্ধ। বাইক নিয়েও কেউ চলাফেরা করতে পারবেন না। এলাকার মানুষেরা নিজেরা সচেতন হয়ে এ কাজে ব্রতী হয়েছেন।

সোমবার এমনই চিত্র দেখা গেল রতুয়া-‌২ ব্লকের অচিনতলার পীরগাই গ্রামে। মঙ্গলবার করে বসে অচিনতলা হাট। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত-‌সহ পুখুরিয়া, চাঁচল, মানিকচক, ইংরেজবাজার, পুরাতন মালদা থেকে ব্যবসায়ীরা ভিড় জমিয়ে থাকেন হাটে। ক্রেতা, বিক্রেতা মিলিয়ে একদিনের হাটে প্রায় ৫০ হাজার মানুষের জমায়েত হয়ে থাকে। এরকম জনপ্রিয় হাট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তে খুশি সংশ্লিষ্ট ব্লকের মানুষ।

ভিনরাজ্যে কাজ করতে যাওয়া শ্রমিকদের কোয়ারেন্টিনে থাকার ব্যবস্থা করেছেন এলাকাবাসীরা নিজেই। এলাকার পীরগাঁই এমএসকে-‌তে ভিনরাজ্য থেকে সদ্য ফেরা শ্রমিকদের ১৪ দিন পর্যবেক্ষণে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাজার থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দোকান খোলা থাকবে সকাল ৬টা থেকে ১০টা পর্যন্ত। আবার বিকেল ৪টা থেকে ৬টা পর্যন্ত। এই দিন মাইকে তা প্রচার করা হয়েছে।

রতুয়া- পীরগঞ্জ রুটে অচিনতলা পীরগাই রাস্তাটিতে বাঁশের ব্যারিকেড করা হয়েছে। এরকম পাড়াপুকুর, সুলতানগঞ্জ-‌ গ্রামে ঢোকার ৭টি পয়েন্টে বাঁশের ব্যারিকেড করা হয়েছে। এদিন গ্রামবাসীরা নিজে থেকেই এই ব্যারিকেড করার কাজে নেমে পড়েন।

গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে মোবারক হোসেন, ডা:‌ প্রবীরকুমার মিত্র, সফিকুল ইসলামরা বলেন,‘‌গ্রামবাসীদের কেউ কেউ লকডাউন ঠিকঠাক মানছেন না। বিচ্ছিন্নভাবে জমায়েতের ঘটনা ঘটেই চলেছিল। আমাদের নিজেদের প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে গোটা গ্রাম মিলে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমরা বাইরের কাউকে এই গ্রামে যেমন ঢুকতে দেব না, তেমনই এই গ্রামের কাউকে বাইরে যেতেও দেব না।’‌

গ্রামের মানুষেদের এই সিদ্ধান্তের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন সংশ্লিষ্ট ব্লকের বিডিও সোমনাথ মান্না। তিনি বলেন,‘‌শুনেছি গ্রামবাসীরা এই উদ্যোগ নিয়েছেন। আইন মেনে এই কাজ করে থাকলে, অবশ্যই প্রশাসন তাঁদের সমর্থন করবে। প্রশাসনের সঙ্গে মানুষের সহযোগিতায় একটি সুন্দর সমাজ ও দেশ গঠন হয়।