সংবাদ মূলত কাব্য 

জলপাইগুড়ি মাল নদীতে মাতৃ প্রতিমা নিরঞ্জনে মৃত আটজন। ৫ নভেম্বর ২০২২

মানুষ ভেসে যায় 

তমাল সাহা

পাহাড়ি খরস্রোতা নদী। নদী নারী। স্ত্রীলিঙ্গ শব্দ। তরাই থেকে নেমে আসে মাল নদী। নিরঞ্জন ও বিসর্জন শব্দ দুটির পার্থক্য শেখায়‌ নদী। মাতৃপ্রতিমার নিরঞ্জনে দিতে গিয়ে বিসর্জনে চলে গেল আটটি প্রজন্ম। নিখোঁজ কত কে জানে? মা! মাগো!

বিজয়া কাকে বলে? সে তো জয়সূচক উৎসব! উমা এসেছিল কৈলাস থেকে। তার পাশে চারটি জাতক শোভা পায়। ফিরে গেল, সঙ্গে নিয়ে গেল দ্বিগুণ আটটি মৃত মানবজাতক। খরস্রোতা গেয়ে উঠল গান– মা দুর্গতিনাশিনী!জলধ্বনির সঙ্গে মিশে যায় আর্তরব— বাঁচাও! বাঁচাও!

দেবতার গ্রাস। রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, আয় তোরে দিয়ে আসি সাগরের জলে। মা বলে, আয় তোরে সঙ্গে নিয়ে যাই বিদায় কালে।

জলই জীবন। তবে কি জলেই মরণ? উদ্ধার বাহিনী! ছিল মাত্র আট জন। উদ্ধারের যন্ত্রপাতি? কর্মীদের হাতে শুধু দড়ি। নৌকা, লাইফ বেল্ট-জ্যাকেট কোথায়?

হড়পা বানের জলের সঙ্গে মিশে গেল চোখের জল। জলের পরিমাণ বোধ করি আরো বেড়ে গেল।

বাতাসে শব্দের জোরও কি বৃদ্ধি পেল? বায়ুমণ্ডলে মিশে গেল হাহাকার।

শুভ বিজয়া, এসো আলিঙ্গন করি। জয় উৎসবে মিষ্টি মুখ করি। মৃত জনপ্রতি দু’লক্ষ মুদ্রা ক্ষতিপূরণ নিয়ে ঘরে ফিরি। মৃতেরও মর্যাদা আছে।

এই দিন-দুনিয়ায় শাসকই একমাত্র ক্রেতা, বিশাল তার দোকান। সে জীবিত মৃত দুপ্রকার মানুষই কেনে।

ইয়া দেবী সর্বভূতেষু সর্বনাশী রূপেণ সংস্থিতা নমস্তস্যৈ নমঃ নমঃ…