অবতক খবর,২৬ জুনঃ এই গোধরা কান্ড,গুজরাতের দাঙ্গা,নিহত হয়েছিলেন কংগ্রেস সাংসদ এহসান জাফরি। তাঁর স্ত্রী জাকিয়ার সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিলেন যে, এই হত্যাকাণ্ডে প্রশাসনিক বৃহত্তর ষড়যন্ত্র ছিল। ‌ একই অভিযোগে মামলা করেছিলেন তিস্তা শীতলাবাদ প্রাক্তন পুলিশ আধিকারিক সঞ্জীব ভাট এবং আর বি শ্রীকুমার। অভিযুক্ত ক্লিনচিট পেয়ে গিয়েছেন। মিথ্যাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন শীতলাবাগ সহ এই তিন অভিযোগকারী।

জরুরি অবস্থার ৪৭তম বর্ষের অর্থাৎ ২৫ জুন গ্রেপ্তার হয়ে গেলেন সমাজকর্মী শীতলাবাদ এবং অন্য দুই পুলিশ আধিকারিক।

দুজনেই উলঙ্গ হয়ে নাচতে শুরু করে দিলো

তমাল সাহা

 

সবই জ্বলছিল তখন।

ভয়, শঙ্কা, আতঙ্ক, ত্রাস,সন্ত্রাস এই পাঁচটি শব্দ একই সঙ্গে জড়ো হয়ে গিয়েছিল

মহল্লায়।

গুজরাটের এক জনপদ থেকে আরেক জনপদে তারা ছড়িয়ে পড়ছিল।

পরে দেখা গেল ভয় শঙ্কা আতঙ্ক–এই তিনটি শব্দ একপক্ষ হয়ে গেল আর

ত্রাস সন্ত্রাস শব্দ দুটি চপার তরবারি জ্বালানি ও আগুন নিয়ে প্রকাশ্য রাস্তায় বেরিয়ে পড়ল

ভয় শঙ্কা ও আতঙ্ক মনের মধ্যে ঢুকে গেল তারা বেরুতে পারল না। লুকোনোর জায়গাও খুঁজে পেল না। ফলত ঘরবাড়ি দোকানপাট পুড়তে লাগল।

পোড়া মাংস ও রক্তের গন্ধ বাতাসে ভাসতে লাগল। বাতাসের একটিই দোষ সে সুবাস এবং পঁচা গন্ধ দুটোই ছড়িয়ে বেড়াতে খুবই ভালোবাসে।

মন্দির মসজিদের সামনেই পড়তে থাকল একের পর এক তরতাজা দেহ।

আর দেহ মাটিতে পড়লেই তার থেকে রক্ত গড়াতে থাকে,আর মাটির প্রচন্ড খিদে,সে সেই রক্ত শুষে খায়।আর পোড়া দেহগুলি ছাই হয়ে মাটির গায়ে লেগে থাকে।

মন্দির মসজিদের ঈশ্বর ও আল্লাহ দুজনেই বেরিয়ে পড়ল মন্দির মসজিদ থেকে।

পাশের বস্তিতে আগুন লেগেছে। চারদিকে জ্বলছে– আগুনের মাঝখানে পড়ে গেছে মন্দির ও মসজিদ। মন্দির ও মসজিদ এর দেওয়ালে স্থাপত্যের কারুকাজ। উত্তপ্ত হয়ে পড়েছে। যেন গরম চুল্লির মধ্যে আটকে পড়েছে ঈশ্বর ও আল্লাহ।

ঈশ্বর ও আল্লাহ পরস্পরকে বলল, কি করবি? এরপর না বেরিয়ে পড়লে তাপে দগ্ধ হয়ে জ্বলে পুড়ে আমাদেরই মরতে হবে। যেভাবে আগুন ছড়াচ্ছে তাতে আমাদেরও নিস্তার নেই।

ঈশ্বর বলে, তাহলে কোথায় পালাবি রে আল্লাহ !

আল্লাহ বলে ওঠে, চল ওই অরণ্যে পালাই।

ঈশ্বর বলে, তোর যা বুদ্ধি! অরণ্যে গাছপালা আছে। এরা অত্যন্ত দাহ্য, এখানে আগুন লাগলে আমরা জ্বলে পুড়ে খাক হয়ে যাব।

আল্লাহ বলে, তাহলে চল নদীতে ডুব দিয়ে থাকি।

ঈশ্বর বলে, ডুব দিয়ে থাকা যায় নাকি! শ্বাসরুদ্ধ হয়ে তো মারা যাবো, কতক্ষণ এভাবে ডুব দিয়ে থাকা যায়?

তাহলে উপায়? তাহলে চল পাহাড়ে যাই।

বাতাস বলে,তাও বাঁচবি না তোরা। পাহাড়েও সরলবর্গীয় বৃক্ষের অরণ্য রয়েছে। একবার লাগলে দাবানলে পরিণত হবে। বাতাসও ওখানে জোরে বইতে থাকে। পাহাড়ের চড়াই উৎরাই ভেঙে পালানো সহজ নয়। আর পালাবি, পালিয়ে তো আবার মাটিতেই নেমে আসবি, ভূপৃষ্ঠেই ঠাঁই নিতে হবে। সে তো একই হলো।

ভাবতে ভাবতে ঈশ্বর ও আল্লাহর যে কি হলো,তারা উলঙ্গ হয়ে নাচতে লাগলো।

বাতাস জিজ্ঞেস করে তোরা উলঙ্গ হলি কেন?

ঈশ্বর ও আল্লাহ বলে উঠলো,দাঙ্গাবাজরা ক্লিনচিট পেয়ে গিয়েছে । এই মাটিতে দাঙ্গা চলতেই থাকবে। আমরা আজ আনন্দে উন্মত্ত হয়ে মুক্ত সভ্যতা কাকে বলে তা মানুষকে দেখাচ্ছি।