অবতক খবর,২৪ অক্টোবর,তমলুক: আমি তো গ্রামের ছেলে! আমি ইন্ডিয়া টিমের খেলেছি। আর আজকাল যত ইন্ডিয়া টিমে খেলছে সবই গরিব বাড়ির ছেলেরা। ধনী লোকের বাড়ির ছেলেদের পরিশ্রম করার ক্ষমতা নেই, কমে গেছে, তাঁরা অল্পেতে সন্তুষ্ট। কিন্তু গরিব বাড়ির ছেলেরা, যারা গ্রাম থেকে উঠে আসে, তাঁরা পরিশ্রম করে, তাঁরা অল্পতে সন্তুষ্ট নয়। উদাহরণ অনেক এরকম খেলোয়াড় আছে।

রবিবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগরার সাহাড়াতে আয়োজিত এক নক – আউট ক্রিকেট প্রতিযোগিতার উদ্বোধনে এসে এমনটাই মন্তব্য করেন ভারতীয় জাতীয় দলের প্রাক্তন ক্রিকেটার তথা ময়নার বিধায়ক অশোক দিন্ডা। এদিন তিনি বলেন, প্রত্যন্ত গ্রামের ছেলেরা জানে না তাঁরা কোন স্পোর্টসে খেলতে যাবে। তাঁরা এখনও জানে না ফুটবল ভালো খেলে, কবাডি ভালো খেলে, নাকি ক্রিকেট ভালো খেলে। গাইডেন্সর অভাব, ট্যালেন্টের অভাব নাই। পরিশ্রম করার ছেলে প্রচুর আছে, শুধু একটু গাইডেন্স লাগবে, টিউনিং লাগবে। সঠিক রাস্তায় এদেরকে দেখাতে হবে। সেই সঠিক রাস্তা দেখানোর জন্য আমি আপাতত যে লাইনে হাঁটছি এখন, আমি চেষ্টা করবো কি বাংলার প্রত্যেকটা গ্রামের ছেলেদেরকে আগামীদিনে সঠিক রাস্তা দেখানোর চেষ্টা করবো। রাজ্যসরকার ক্লাবগুলোকে অনুদান দেওয়ার প্রসঙ্গে ক্রিকেটার অশোক দিন্ডা কটাক্ষ এর সহিত বলেন, এই তো দিঘাতে আছে ইয়ুথ স্পোর্টস কমপ্লেক্স। এখানে খেলোয়াড়রা থাকে, তৃণমূলের লোকেরা থাকে, পার্টি অফিস বানিয়ে দিয়েছে।

এখানে এখানে কোনো ক্রিকেটার দিঘাতে আসে কি? আমি ছোটবেলা থেকে দেখেছি দিঘাতে লোক হনিমুন করতে আসে। শনিরবিবার এখানে পিকনিক করতে আসে, এখানে কই খেলাধুলা করে কোটি কোটি টাকা খরচ করে জায়গা কিনে যে স্পোর্টস কমপ্লেক্স বানালো, ইয়ুথ হোটেল বানালো। সেখানে তো তৃণমূলের পার্টি অফিস হয়ে গেছে। শুধু দীঘা না বিভিন্ন যেখানে যেখানে হনিমুন স্পট, দেখুন তৃণমূলের লোকেদের প্রচুর গার্লফ্রেন্ড রয়েছে। এই জন্য এই ধরণের পিকনিক স্পট গুলোকে ম্যাটার করে, যেমন শুশুনিয়া পাহাড়, দার্জিলিং, ডুয়ার্স- এগুলো হনিমুন স্পট ওখানে গিয়ে ইয়ুথ স্পোর্টস হোস্টেল বানিয়েছে কোটি কোটি টাকা খরচ করে। সেখানে গিয়ে কত রকমের ‘অপা’ আমরা দেখতে পাচ্ছি। এটাই হচ্ছে রাজ্যের কষাগারের টাকা খরচ করে, যেখানে দরকার, এই দরকার হয়তো কলকাতাতে একটা, তমলুকে একটা, যদি দরকার হয় তো দুর্গাপুরে একটা, বহরমপুর ও শিলিগুড়িতে একটা বানাও। তারপরে কলকাতা তো একটা মিডল স্পট। তাই এগুলো ঠিক করতে হবে কোথায় কোথায় দিলে আমাদের ছেলেরা, গ্রাম বাংলা থেকে যারা উঠে আসছে তাঁরা গিয়ে কোথায় থাকবে? আমি হাওড়া স্টেশনে ঘুমিয়েছি, আমি পাঁশকুড়া স্টেশনে ঘুমিয়েছি। ঘুমিয়ে আবার পরের দিন খেলতে চলে গেছি। এরকম বহুদিন হয়েছে। আমি কোলে মার্কেটে নয় বছর রাত কাটিয়েছি। তাই খেলাধুলা করে নাম পাওয়া যায়, অর্থ উপার্জন করা যায়, দেশকে রিপ্রেজেন্ট করা যায়। এদিন সাহাড়াতে ক্রিকেট উদ্বোধনী ম্যাচে ক্রিকেটার অশোক দিন্ডাকে দেখার জন্য বহু মাঠে বহু মানুষের সমাগম ঘটে। কেউ কেউ অশোক দিন্ডার সঙ্গে হাত মেলান আবার অনেকে সেলফিও নেন। কার্যত অশোক দিন্ডাকে কাছে পেয়ে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল সাহাড়ায় একেবারে উৎসবের রূপ নেয়।