চোখের সামনে ক্ষমতা দখলের নামে ছাগল বেচাকেনা চলছে। কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে ছাগলদের পাহারা দিচ্ছে রাষ্ট্র। অন্যদিকে বন্যায় বিপর্যস্ত মানুষ, বিধ্বস্ত আসাম। এই দুটি দৃশ্যকে সামনে রেখে অবতকের বিশেষ প্রতিবেদন।

বৃষ্টির জন্য একটা প্রবন্ধ

আকাশের গায়ের রং কালো হয়ে উঠছে। কালো মেঘ ঘিরে ফেলছে আকাশের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত।

মনসৃজাকে বলি,চলো রানি রাসমণি ঘাটে যাই। ‌ওখানে গিয়ে ভাগিরথী তীরে বসে বসে বৃষ্টির দৃশ্য দেখব। আর সব নীরব কথা, গোপন কথা খোলাখুলি বলব, ইচ্ছেগুলি পাখির ডানার মতো মেলে মেলে উড়বে।

আজ রবিবার, ছুটির দিন। ‌তবে দিনটা ভালোই কাটবে বোধ করি। ‌আর বৃষ্টি হলে ভেজাও যাবে। যেটা তোমার খুব পছন্দ। ‌মনসৃজাকে আর পায় কে?

চলো আগে ভুবনেশ্বরী মন্দিরটা একটু ঘুরে আসি। তখন অল্প হাওয়া বইছে। ‌আকাশ কালোই আছে। গাছের মাথাগুলো দুলছে। ‌এবার চলো নদীর পারে গিয়ে বসি। এখন যদি বৃষ্টি আসে আমরা দুজনে ভিজবো নদী পারে বসেই । এই বলে মনসৃজা আকাশের দিকে তাকালো।

আমি বলি, তুমিতো ভূপেন হাজারিকার গান শুনেছো। মনসৃজা বলে,সে আর বলতে! কী অদ্ভুত আশ্চর্য কণ্ঠস্বর! কি গলা,অন্য গায়কী।

আমি বলি, তাইতো! ব্রহ্মপুত্র বরাক কত সব নদী। ‌জলের গান শুনতে চাও তো ভূপেন হাজারিকার কাছে যাও। ওই যে, গঙ্গা আমার মা, পদ্মা আমার মা। অথবা ও গঙ্গা তুমি বইছো কেন। এ গান পৃথিবীর কে না জানে!

শোনো, যদি বৃষ্টি দেখতে হয়,তাহলে চলো চলে যাই অসমে।

বরিষণ আর বর্ষণে এই শব্দ দুটিতে তফাৎ জানো? মনসৃজা বলে, বরিষণ একটু মৃদু শব্দ। বর্ষণ শব্দটার মধ্যে একটা তীব্রতা আছে। আমি আচমকাই ওর গালদুটো একটু নেড়ে দিই–ঠিক বলেছো।

শোনো অসমে বন্যার জেরে ৩২টি জেলা বিপর্যস্ত। ‌৫৫ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। ‌৮৯ জন মানুষ ইতিমধ্যে মারা গিয়েছে। ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। রাজ্য বিপর্যয় বাহিনী, স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী বন্যা মোকাবিলায় নেমেছে। বরাক শিয়ারি নদীর জল বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। করিমগঞ্জ হাইলাকান্দি জেলায় মানুষদের জীবন জেরবার। লক্ষ লক্ষ মানুষ হা হুতাশ করেছে।

মনসৃজা বলে,কাগজে তো এতসব দেখছি না! এই বলতে বলতে বৃষ্টি নেমে এলো।

আয় বৃষ্টি ঝেঁপে। মনসৃজা বলে, ভিজব না। চলো মন্দিরের ওই যে চাতাল! আশ্রয় রয়েছে, তার নীচে গিয়ে দাঁড়াই। বৃষ্টি থামুক একটু অপেক্ষা করি। আজ বৃষ্টিতে আর ভিজব না।