বিদ্যাসাগর মশাই তো আমার বাপ
তমাল সাহা

এক) পদাতিক

তোমার তেমন ছিল না প্রচার
তুমি একাই একশ, একটি প্রতিষ্ঠান।
সমাজসেবায় এখন এনজিও লাগে
তুমি দ্রোহী, একাই প্রত্যয়ী আগুয়ান।

দুই) ঈশ্বর

টুকুন বলে, বাবা, তুমি বলেছিলে
ঈশ্বর দেখেছো, তা কোথায়?
আমি বলি, সে মেদিনীপুর থেকে
পায়ে হেঁটে আসছিল কলকাতায়
আর বর্ণ পরিচয়ের পাতায়।

সে ছিল খুব নারী প্রিয়।
টুকুন বলে, এর মানে,
তুমি তাকে করছো হেয়!

সে তো নারী শিক্ষা-বিধবা বিবাহ চালু,
বাল্য বিবাহ রোধে খেয়েছিল ঢিল ও গালি।
ভণ্ডদের সে কী হাততালি!

আদিবাসীদের পাশে ছিল সে
ধর্মবাজদের করেছিল তুলোধোনা।
সে-ই আমার ঈশ্বর!
তার পাশে তখন মানুষ ছিল কড় গোণা!

তিন ) তোমার জন্মদিন

দিবস-টিবস আমি মানিনা
শুধু এটুকু বলতে পারি
তোমার জন্মদিনকে
শিক্ষক দিবস হিসেবে পালন জরুরি।

সেই কবে তুমি
চেতনাবৃদ্ধির করেছো আয়োজন
সার্বিক শিক্ষার পতাকা উত্তোলন!
কতো বাধা প্রতিবন্ধকতা
তবু উন্নত শির, হেঁট করোনি মাথা।

তোমার শিরোচ্ছেদ! নির্লজ্জ এই জাতি।
এই অক্ষরজীবীর প্রেরণা তুমি,
লহ প্রণতি।

চার) ক্ষমা

যারা তোমার কেটেছে মাথা
ভেঙে দিয়েছে তোমার মূর্তি।
ক্ষমা করে দিও তাদের
এই শব্দজীবীর করুণ আর্তি!

পাঁচ) বর্ণ পরিচয়

বর্ণ- এর সাথে পরিচয়
করিয়েছিলে তুমি
ভুলতে বলেছিলে বর্ণ বিদ্বেষ।
সেই বর্ণে বর্ণে পরিচয় হয়নি আজো
হিংসায় মেতে আছে তোমার স্বদেশ।

ছয়) টিপ সই

বিদ্যাসাগর মশাই-ই তো
আমার আসল বাপ!
তাঁর জন্মদিন আজ।

তিনি না থাকলে
কে করাতো আমায়
বর্ণ পরিচয়
দিতে দিতে ক্লান্ত হতাম
বুড়ো আঙুলের ছাপ!