আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা 45 বছর সমাপ্তি ঘটে গেল! আমাদের প্রাণের বইমেলা

বইয়ের গন্ধ
তমাল সাহা

নামকরণের সময়
টুকুনের সামনে রাখা হয়েছিল
একটি বই ও সোনার আংটি।
টুকুন বারবার বইয়ের উপর হাত রাখছিল রাখছিল। দৃশ্যটি আমি চোখে ধরে রেখেছিলাম,
বুকে গেঁথে রেখেছিলাম।

টুকুন বাড়ছে দৈর্ঘ্যে প্রস্থে এবং
চিন্তনে মননে।

ব-বর্ণ দিয়ে সবচেয়ে ভালো কি হয় বলো?
আমি বলি, বাবা।
ও বলে অমর চিরজীবী কি হয় বলো?
আমি চুপ করে ভাবি, মাথায় কিছু আসে না।
ও বলে ওঠে, এতো সোজা, বই!

বইমেলা এখন সব জায়গায়।
বাবা, বইমেলা চলো না!
এ বয়সে আর পোষায় না।
চাকদা কল্যাণী নৈহাটি চুঁচুড়া সব জায়গায় বইমেলা।
সব বইমেলায় ওর যাবার ইচ্ছে।

টুকুন বলে, আমার দুটো গন্ধ ভালো লাগে
বাবার গায়ের গন্ধ আর বইয়ের গন্ধ।
আমি বলি, আস্তে বল, মা শুনতে পাবে!

বই স্টলে ঢুকে পছন্দসই বই দেখলেই
টুকুন এদিক ওদিক তাকিয়ে
বই খুলে তার গন্ধ শুঁকে নেবে।
তারপর কিনবে–
ও গন্ধ না শুঁকে কিছুতেই বই কিনবে না।

কলকাতা বইমেলায় প্রতিটি স্টল ওর ঘোরা চাই।
ওর জন্য কম করে তিন দিন যেতে হয় বইমেলায়।

বাবা,
বই নিয়ে নেড়েচেড়ে দেখতে কি ভালো লাগেনা!
মনে হয় অক্ষরগুলো আমার দিকে চেয়ে আছে।

দেখা স্পর্শ ঘ্রাণ নেওয়া ছাড়া মানুষ বাঁচে না– বইও তেমনি!

টুকুন আমার চোখের সামনে বড় হতে থাকে
বইমেলার মাঠে
তার ছায়া দীর্ঘতর হয়ে হেঁটে যায়…