রবীন্দ্র প্রণাম
তমাল সাহা

যারা দেখেছে বা যারা দেখেনি সবার মুখে একই কথা শুনি, আমাদের রবীন্দ্রনাথ আছে।

তারমানে বোধ করি তারা এটাই বলতে চায়
আমাদের এমন একটা দামী জিনিস আছে যা আর কারো কাছে নেই।

টুনটুনি পাখি উড়ে গিয়ে রোজ রাজার বাড়ির জানালায় বসতো। আর রাজার কান ঝালাপালা করে দিয়ে বলতো, আমার ঘরে যে ধন আছে রাজার ঘরেও সে ধন নেই।

ওইটুকু ছোট্ট পাখি তার দেখেছো অহংকার! ওই তো পুঁচকে গলা! সেই গলা বাজিয়ে বলে কিনা রাজার ঘরেও সে ধন নেই!

আমিও বলি আমাদের রবীন্দ্রনাথ আছে সে তো কবে থেকেই শুনছি তাতে আমাদের কি ভালোটাই বা হয়েছে?

রবীন্দ্রনাথের ঋতু প্রেম পুজো পর্যায়ের গান আছে। আমরা খুব গর্ব করে গাই তাতে কি?
আমাদের সত্যিই কি কোনো যথার্থ ঋতু, সত্যিকারের প্রেম, ভালবাসার পুজো আছে!

রবীন্দ্রনাথ রাষ্ট্র পুলিশ শাসন শিক্ষা নিয়ে তো কত কথাই বলে গেছে তাতে কি আমাদের কোনো ভালো হয়েছে, মানুষের উন্নয়ন হয়েছে?

টাকা পয়সা ধন দৌলত থাকলে মানুষের বাড়ি গাড়ি আরো কত কী হয়!
রবীন্দ্রনাথ আছে বলে আমাদের চারটে পা চারটে হাত গজিয়েছে?
আমাদের বাড়ি গাড়ি তো দূরের কথা আমাদের পেটে কি দুমুঠো ভাত বেশি আছে, আমাদের রুজির কি কোনো ব্যবস্থা হয়েছে?

আমরা গান গাইতে বসে যাবো,
আমার মাথা নত করে দাও হে প্রভু তোমার চরণধূলার তলে! সে কী বিনম্রতা রে ভাই!
সত্যিই কি এই গানের কোনো মানে আছে?

রক্তকরবীর রাজা কি মানুষের জন্য রাস্তায় নেমেছে
বা আমরা রথের রশি-র আয়োজন করতে পেরেছি?
কতবার যে বিসর্জন দেখেছি আবার দাঙ্গাও করেছি!

এখন কত শ্যামা চিত্রাঙ্গদা কৃপণ অন্তর মম বিকশিত করো– হরেক আওয়াজ উঠবে এই বৈশাখ থেকে শ্রাবণ বেলায়। তাতে আর কি হবে?

রবীন্দ্রনাথ মানে কি কদিন জুড়ে এই নৃত্যনাট্য,কবিতা আর কয়েকটা রবীন্দ্রনাথের গান যাকে তোমরা বলো রবীন্দ্রসঙ্গীত!

চোর জোচ্চোর শিল্পওয়ালা রাষ্ট্র সবাই এর নাম দিয়েছে রবীন্দ্র প্রণাম।
আর শিরদাঁড়াহীন ভাঙা গলায় আবৃত্তায়নে মেতেছে চিত্ত যেথা ভয় শূন্য উচ্চ যেথা শির…

প্রণাম মানে কি?
মেঘ বলেছে যাব যাব, রাত বলেছে যাই…
সাগর বলে কূল মিলেছে,আমি তো আর নাই