বিনয় ভরদ্বাজ, অবতক খবর  ::   দেশে একদিনের সর্বাধিক আক্রান্তের এর নজির গড়লো করোনা । গত ২৪ ঘন্টায় দেশে দু লাখ ৬০ হাজার পার করলো করোনা আক্রান্তের সংখ্যা । করোনার এই দ্বিতীয় ঢেউ দ্রুত গতিতে ছড়াচ্ছে বলে দাবি চিকিৎসক মহলের।

দেশে সবচেয়ে বেশি যে রাজ্যে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন তা হল মহারাষ্ট্র। গত ২৪ ঘন্টায় মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৬৭১২৩ জন। দ্বিতীয় সবচেয়ে বেশি করোনা আক্রান্ত রাজ্যের মধ্যে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ । যেখানে একদিনে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৭ হাজার ৩৩৪ জন। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ নিজেও করোনা আক্রান্ত, তবে তিনি করোনা আক্রান্ত হলেও বাংলায় ভোট প্রচারে তিনি বারেবারে নিয়ম মেনে চলে আসছেন।

করোণা রোগে আক্রান্ত নিরিখে মহারাষ্ট্র ও উত্তর প্রদেশ এরপর রয়েছে ছত্রিশগড় যেখানে ২৪ ঘন্টা আক্রান্তের সংখ্যা ১৭ হাজার ছাড়িয়েছে। তাছাড়া দিল্লিতে ২৮ হাজার ৩৭৫ জন এবং কর্নাটকে ১৭ হাজার ৪৮৯ জন এবং মধ্যপ্রদেশে ১১ হাজার ২৬৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন। যদিও পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ ঘন্টায় করুণায় আক্রান্তদের সংখ্যা ৭৭১৩ জন।

পশ্চিমবঙ্গে করোনায় বাড়বাড়ন্ত দেখে রাজ্যের চিকিৎসক মহলের সঙ্গে বিশেষ বৈঠক করেন মুখ্য সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্ন বৈঠকের পর নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। তাছাড়া গোটা রাজ্য জুড়ে সকল সরকারি বেসরকারি হাসপাতাল গুলিকে সর্তকতা দেওয়া হয়েছে। রাজ্যে যখন করোনা একেবারে চরম অবস্থায় ছিল তখন যে বেডের সংখ্যা ছিল তার থেকে কুড়ি থেকে ত্রিশ শতাংশ বেড বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বেসরকারি হাসপাতাল গুলোতে এই সপ্তার মধ্যে ৩০০০ করোনা রুগীর জন্য বেড বাড়ানোর জন্য নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন।

অন্যদিকে সকল সরকারি হাসপাতালগুলোতে করোনার পরিকাঠামো ও বেড বৃদ্ধির জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গতবারের থেকে এবার ৩০% বৃদ্ধি করা হবে বলে জানা গেছে তাই খবর অনুযায়ী এবার করোনার জন্য সরকারি ৮০০০ বেড বৃদ্ধি পরিকল্পনা রয়েছে যেটা এক সপ্তাহের মধ্যে সম্পন্ন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালকে সম্পূর্ণ করনা হাসপাতালে পরিণত করা হয়েছে এই হাসপাতলে ২০০টি করোনা রোগীর বেড থাকবে বলে জানানো হয়েছে।

সব মিলিয়ে করণা মোকাবিলার সবরকম ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার যদিও নির্বাচনের প্রচার এর উপরে কোন ছাপ পড়ছেনা করোনার। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে রাত আটটা থেকে সকাল দশটা পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচার এর উপরে রেলি মিটিং এর মিছিলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে অর্থাৎ রাতে করনা বেশি বাড়ছে বলে মনে করছে নির্বাচন কমিশন তাই রাতে প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে তবে দিনে মিছিল-মিটিং এবং প্রচার এর জন্য ছাড় দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

উল্লেখ্য করণা বাড়বাড়ন্ত দেখে বামপন্থীরা বড় বড় রেলি মিছিল-মিটিং না করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন তারা ছোট ছোট গাড়ি বা ডোর টু ডোর প্রচারে জোর দেবেন বলে জানিয়েছেন। তাছাড়া করো না বার বার অন্তর জন্য পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচনী সমস্ত সভা বাতিল করেছেন কংগ্রেস কেন্দ্রীয় নেতা রাহুল গান্ধী তিনি মানুষকে সতর্ক থাকতে মাক্স পড়তে ও ভির এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন অথচ তৃণমূল বা বিজেপি তেমন কোন বড় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি এখনো পর্যন্ত।

প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদি গত শনিবার পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনী সভা কে সম্ভব করার পর করনা পরিস্থিতি নিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন। তিনি দেশে করোনা দ্রুতগতিতে বাড়ছে তা নিয়ে চিন্তা জাহির করেছেন তিনি ঔষধ উৎপাদনকারী, ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী সংস্থা কে দ্রুত ভ্যাকসিন নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছেন। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন গতবারের মতো এবারও তারা করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করবেন ও ব্যবস্থা নেবেন।

প্রধানমন্ত্রী এইবার তারপর মানুষের মধ্যে ফের প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যে দ্রুত ঔষধ চিকিৎসা হাসপাতালে ব্যবস্থা অক্সিজেন ডক্টর এসব কোনো ব্যবস্থা না ভেবে প্রধানমন্ত্রী গত বারের মতন ব্যবস্থার কথা জানিয়েছেন তাহলে কি এবারেও কাসর ঘন্টা শাখ বাজাতে ও অসময় দীপাবলি পালন করতে বলবেন নাকি তিনি।

করোনার বাড়বাড়ন্ত নিয়ে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি পরিষ্কার জানান এটা তার ভাবার বিষয় নয়। যাদের ভাবার, তারা ভাবছে। তবে তিনি সব নিয়ম মেনেই কাজ করছেন।

এক মোদী ভক্ত জানান গতবারের তিনি কাঁসরঘন্টা না থাকার কারণে থালা বাজিয়ে কাজ চালিয়ে নিয়েছিলেন কিন্তু এবার আগের থেকেই বড় বড় শাঁক ও কাঁসরঘন্টা কিনে রাখবেন সে মোদীজি বললেই এবার খুব জোরে ঘন্টা বাজিয়ে করোনা কে অনেক দূর তাড়িয়ে দেবেন।