তুমি ছিলে ইছাপুর নর্থল্যিন্ড হাই স্কুলের হেড মাস্টারমশাই। তুমি নিজেও কোনোদিন জবরদস্ত অভিনয় করেছ। তুমি লিখে গেছো 195 টি যাত্রাপালা।
1936 সালে ভোলানাথ অপেরায় অভিনয় করেছ তুমি। এক সময়ে তুমি আর প্রখ্যাত নট্য কোম্পানি পরিপূরক হয়ে গিয়েছিল।
1934 সালে লীলাবসান যাত্রাপালা রচনার জন্য লালমুখো পুলিশ তোমায় ডেকে নিয়ে গিয়েছিল লালবাজারে।
প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায় এবং সুপ্রিম কোর্টের রায়কে উপজীব্য করে তুমি লিখেছিলে যাত্রাপালা কাজীর বিচার।কিংবদন্তি যাত্রাপালাকার তোমাকে কাঁচরাপাড়া একদিন সংবর্ধনা জ্ঞাপন করেছিল। সেই দিনটি ছিল 27 ডিসেম্বর 1975 সাল। সংবর্ধনা দিয়েছিল রামকৃষ্ণ স্পোর্টিং ক্লাব কবরখানা ময়দানে।
বাংলার যাত্রা জগতের মহান পালাকার লোকশিক্ষক ব্রজেন্দ্রকুমার দে-র আজ জন্মদিন।
বাংলা যাত্রায় তিনি নতুন প্রবাহ এনেছিলেন, যোগ করেছিলেন নতুন মাত্রা। বাংলার যাত্রা মানেই ব্রজেন দে– এক সময়ে এমনই ধারণা গড়ে উঠেছিল।

পালাকার মাস্টারমশাই
তমাল সাহা

যাত্রা দেখে ফাতরা লোকে—
প্রবাদ ভেঙে চুরমার।
যাত্রাকে পৌঁছে দিয়েছ তুমি অন্যমাত্রায়
এ বাঙালির গর্বিত অহংকার।

যাত্রাকে নিয়ে এলে নব আলোকে—
ঐতিহাসিক যাত্রা তো ছিলই
ক্রমে তাতে ঢুকে গেল সামাজিক বীক্ষা।
তুমি তো মাস্টারমশাই!
নতুন ধারায় চলে এলো শিল্পিত নির্মাণ—
এতো জন-পালাগান, নিতে হবে দায়
বুঝে গেলে দিতে হবে লোকশিক্ষা।

সামাজিক অবস্থা,শাসন-শোষণ, দেশপ্রেম–
কি ছিল না তোমার পালাগানে!
ছাউনির নিচে
কাতারে কাতারে মানুষের জমায়েত
তোমার ডায়ালগে আবিষ্ট, কান পেতে শোনে।

সোনাই দীঘির সংলাপ মুখে মুখে ফেরে
নটী বিনোদিনীর নাটকীয়তা ঘরে ঘরে।
আঁধারের মুসাফির, কাজীর বিচার, নন্দকুমারের ফাঁসি—প্রমাণ করেছে তুমি দক্ষ পালাকার।
যে দেখেনি
সে বাঙালি নাকি, মূর্খ কোথাকার!