অবতক খবর: গভীর রাতে কলকাতায় মার্কিন কনস্যুলেট তথা দূতাবাসের সামনে সন্দেহজনক গতিবিধি এক মহিলার। দেখা মাত্রই পাক চর সন্দেহে ওই মহিলাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে কলকাতা পুলিশ। যদিও ওই মহিলার পাক যোগ প্রমাণিত না হওয়াতে শেষমেশ ২৪ ঘণ্টা বাদে সন্দেহভাজনকে ছেড়ে দিল পুলিশ।

জানা গিয়েছে, রাতের অন্ধকারে হো চি মিন সরণির মার্কিন কনস্যুলেটের আশপাশে ঘোরাঘুরি করছিলেন মহিলা। সিসিটিভিতে তাঁকে সন্দেহজনক ভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখে আটক করা হয়। মহিলার কাছ থেকে পাকিস্তানের পাসপোর্ট উদ্ধার হয়েছে। এরপরই তৎপর হয়ে পড়েন গোয়েন্দারা। তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া একাধিক মোবাইল থেকে পাকিস্তানে বহুবার হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রামে ফোনকল, সোশ্যাল মিডিয়ার চ্যাট দেখেও সন্দেহ প্রকাশ করেন গোয়েন্দারা। কারণ, কিছুদিন আগে উত্তরপ্রদেশের এটিএসের হাতে ধরা পড়েছে সন্দেহভাজন পাক চর সীমা হায়দার। এরপর থেকে আরও সতর্ক দেশের প্রত্যেকটি রাজ্য ও শহরের গোয়েন্দারা।

ওই মহিলা সম্প্ররকে নার জানা গিয়েছে,প্রায় ২৪ ঘন্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জেরায় তাঁর কাছ থেকে আইএসআই যোগ বা কোনও জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যোগসাজের প্রমাণ গোয়েন্দারা পাননি বলে জানা গিয়েছে। পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, আত্মীয়র মাধ্যমে কলকাতার এক যুবকের সঙ্গে পাক মহিলার বিয়ে হয়। লকডাউন কাটতে ২০২১ সালের ২৭ ডিসেম্বর পাকিস্তান থেকে দিল্লি হয়ে কলকাতায় আসেন।

কলকাতায় স্বামীর সঙ্গে থাকেন। স্বামী বেকার। মহিলা কাজ করে সংসার চালান। প্রায় ৬ মাস আগে মধ্য কলকাতার তালতলা এলাকার একটি বহুতলে ফ্ল্যাট ভাড়া নেন ওই দম্পতি। আগামী ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত মহিলার এই দেশের ভিসা রয়েছে। পাক মহিলার দাবি, যেহেতু কলকাতার ভিসা আগামী কয়েক মাসের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে, তাই তিনি মধ্যপ্রাচ্য হয়ে আমেরিকায় চলে যাওয়ার ছক কষেছিলেন। সেখানেই জীবিকা অর্জনের পরিকল্পনাও ছিল তাঁর। সেজন্য তিনি মার্কিন কনস্যুলেটে যোগাযোগ করতে এসেছিলেন। মহিলা বিউটি পার্লারে কাজ করেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। সকাল ১১টায় বেরিয়ে যেতেন। ফিরতেন রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ। গোয়েন্দারা মহিলার স্বামীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তবে ছেড়ে দেওয়া হলেও তাঁর গতিবিধির ওপর গোয়েন্দারা নজর রাখছেন বলে সূত্রের খবর।

২১ বছর আগে কলকাতার মার্কিন তথ্যকেন্দ্রের সামনে জঙ্গি হামলার ঘটনা এখনও দাগ রেখে গিয়েছে। ফলে মার্কিন কনস্যুলেটের সামনে পাক মহিলার সন্দেহজনক আনাগোনার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখেন গোয়েন্দারা।