অবতক খবর , নদীয়া :      শান্তিপুর শহরে চার নম্বর ওয়ার্ডের কামারপাড়া এলাকায় এক বৃদ্ধদম্পতির জ্বর সংক্রান্ত কারণে শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে লালা রস নমুনা সংগ্রহ করা হয় গত ২৪. ০৮ তারিখে। গতকাল অর্থাৎ ২৬.০৮ তারিখে ৬৫ বছর বয়স্ক বৃদ্ধর পজিটিভ রিপোর্ট আসে। সেই মোতাবেক তাকে রানাঘাট কোভিড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধার রিপোর্ট নেগেটিভ আসলেও জ্বর কমে না কিছুতেই। যেহেতু বৃদ্ধ করণা পজিটিভ রিপোর্ট আছে তাই ওই বৃদ্ধাকে শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য কোনো এম্বুলেন্স ,টোটো বা কোনো যানবাহন যেতে রাজি হননি ঐ রোগীকে শান্তিপুর হাসপাতলে নিয়ে আসার জন্য কোনো ব্যবস্থাই করতে পারেননি ছেলে।

এ বিষয়ে ওই পরিবারের পাশে প্রাক্তন কাউন্সিলর তথা বোর্ড অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটরের সদস্য ১০২ আম্বুলান্স পাঠানোর ব্যবস্থা করলেও সন্ধ্যে ছটা নাগাদ আসে সেই অ্যাম্বুলেন্স! তাও পি পি ই কীট ছাড়াই দুজন, দূর থেকেই বলেন গাড়িতে তুলে দেওয়ার জন্য। কিন্তু ততক্ষনে শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়েছে বৃদ্ধার। এরপর রাত আটটা নাগাদ শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতাল থেকে ডাক্তার এসে মৃত বলে ঘোষণা করেন। যেহেতু জ্বরে ভুগছিলেন ওই বৃদ্ধা তাই দ্বিতীয়বারের জন্য গত ২৬ তারিখেও লালা রসের নমুনা সংগ্রহ করে শান্তিপুর হাসপাতাল। স্বাস্থ্য বিধি অনুযায়ী তাই সেই রিপোর্ট হাতে না পাওয়া পর্যন্ত ওই মৃতদেহ দাহ করা যাবে না। যদি পজিটিভ রিপোর্ট আসে তাহলে মৃতদেহ বাড়িতে নিয়ে এসে সৎকারের কোনো সুযোগ পাওয়া যাবে না। নেগেটিভ রিপোর্ট আসলে সাধারণ মৃতদেহের মতো পরলৌকিক ক্রিয়া কর্মাদি সম্পন্ন করা যাবে। এরপর রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ রানাঘাট মর্গে নিয়ে যাওয়া হয় মৃতদেহ।

যারা যেটুকু সহযোগিতা করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেই ওই বৃদ্ধ দম্পতির ছেলে হাসপাতাল বা প্রশাসনিক আরো বেশি তৎপরতা, এবং প্রত্যেক আম্বুলান্স টোটো চালক দের আরো বেশি মানবিক হওয়ার আবেদন জানান। তিনি আক্ষেপের সুরে বলেন নেগেটিভ রিপোর্ট থাকা সত্বেও আমার মাকে শেষ বারের জন্য চিকিৎসা করাতে পারলাম না অ্যাম্বুলেন্স বা অন্য কোনো যানবাহনের অভাবে। এইরকম যেনো অন্য কোন সন্তানের মায়ের সাথে না ঘটে এই কামনাই করি।