অবতক খবর,বিনয় ভরদ্বাজ,৬ আগস্ট ::  নদীয়ায় তৃণমূলের বেহাল অবস্থা ফেরাতে উদ্যোগী দল। জেলার ১৭টি বিধানসভা সিটের মধ্যে দক্ষিণ নদীয়ার প্রায় সবকটি সিটে গুটিয়ে গেছে তৃণমূল। ‌ কৃষ্ণনগর থেকে কল্যাণী-হরিণঘাটা পর্যন্ত ৯টি সিটে তৃণমূলের ভরাডুবি হয়েছে। দলের হাল ফেরাতে জেলা ভাগ করে দুটি সাংগঠনিক জেলা গঠন করতে চলেছে দল। তবে যোগ্য সভাপতির খোঁজে হিমশিম খেতে হচ্ছে রাজ্য নেতাদের।

জেলা নেত্রীর মহুয়া মৈত্র নির্বাচনের পর থেকে জেলার ৯টি সীটে হারের জন্য না নিজে দায়িত্ব নিয়েছেন আর না এ নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠক ডেকেছেন! জেলা নেত্রীর এই মনোভাব নিয়ে দলের ভিতরে ক্ষোভে ফুঁসছেন নিচুতলার বহু নেতাকর্মীরা। কিন্তু মহুয়া দেবী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বেশি প্রিয় পাত্রী হওয়ায় ভয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে পারছেন না জেলার কোন নেতা নেত্রী।

তবে এই ডামাডোল পরিস্থিতি সামাল না দিলে দলের অবস্থা ভাল হবে না বলে মনে করেন প্রায় সকল ছোট বড় নেতা নেত্রীরা। সামনে উপ নির্বাচন। এছাড়াও পৌরনির্বাচন ঘাড়ের উপরে নিঃশ্বাস ফেলছে। এমন পরিস্থিতিতে জেলা নিয়ে ভাবনা চিন্তা করার ও দলীয় কোন্দল মিটানোর মত পদক্ষেপ জেলা নেত্রী নিতে পারেননি এখনও। এছাড়াও যেসব সিট তৃণমূল হেরেছে সেই সব এলাকায় গোষ্ঠী কলহ একেবারে চরমে। এই পরিস্থিতিতে দলের স্বার্থে এবার প্রকাশ্যে মুখ খুললেন জেলার তৃণমূল সাধারণ সম্পাদক মনোজ চক্রবর্তী।

তিনি জানান, মহুয়া দেবী তো বড় নেত্রী। তিনি লোকসভা ও কেন্দ্রীয় রাজনীতি নিয়ে বেশি ভোকাল। এমন অবস্থায় জেলার দিকে নজর দেওয়ার মতন সময় হয়ে উঠছে না তার কাছে। ‌তাই রাজ্য নেতৃত্বের দল নিয়ে ভাবার দরকার আছে। তিনি বলেন,৯টি সিটের হারের কারণ পর্যালোচনা করে দলকে স্বমহিমায় ফেরাতে উদ্যোগী হতে হবে রাজ্য নেতৃত্বকেই।

মনোজ বাবু জানান, কল্যাণী-রানাঘাট পুলিশ জেলা নিয়ে যে ৯টি বিধানসভা রয়েছে তার দায়িত্ব একজন শক্তপোক্ত নেতার হাতেই দেওয়া দরকার। এখানে দাপুটে ও সাংগঠনিক নেতার প্রয়োজন রয়েছে। নচেৎ দলের অন্তর্কলহ মেটানো যাবে না। তিনি দলের হাল ফেরাতে মুকুল রায় ও শংকর সিংকে তৎপর করে তুলতে রাজ্য নেতা ও সর্বোচ্চ নেত্রীর কাছে আবেদন জানান।

তবে একদিকে যখন এই জেলার ভরাডুবি থেকে বেরিয়ে আসতে দল নতুন নেতৃত্ব খুঁজে বেড়াচ্ছে। তখন বিজেপি থেকে তৃণমূলে যোগদান করা প্রবীণ নেতা ও কৃষ্ণনগর দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক মুকুল রায় তার কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে যে মন্তব্য করেছেন,তা দলের অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

‌মুকুল বাবু সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জানান, এখানে ভোট হলে তৃণমূল হেরে যাবে। মুকুল বাবু বলেন,”উপ নির্বাচন হোক। উপনির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষ থেকে আমি বলতে পারি যে, তৃণমূল কংগ্রেস এখানে পর্যদস্তু হবে।’  কৃষ্ণনগরে ভারতীয় জনতা পার্টি তার স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠিত হবে।”

তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় উপাধ্যক্ষ মুকুল রায়ের এই মন্তব্যে নদীয়া জেলার নেতারা ভীষণ অস্বস্তিতে পড়েন। যদিও শেষের দিকে মুকুল রায় জানান যে, তৃণমূল স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠিত হবে। তাঁর এই মন্তব্য দলের ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্নতে জল ঢেলে দিচ্ছে তাতে সন্দেহ নেই। তবে দল এখন কি পদক্ষেপ নেয় সেদিকেই তাকিয়ে জেলা নেতারা।