অবতক খবর, সংবাদদাতা , মালদা: – দুর্ঘটনার ৫ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও খোঁজ নেই মন্টু শেখের(‌৩৫)‌। পরিজনেরা সেই সকাল থেকে ঠাঁই বসে থাকেন ঘটনাস্থলের কাছে। বিকেলে তল্লাশি অভিযান বন্ধ হলে তখন একরাশ কষ্ট নিয়ে বাড়ি ফিরে যান তাঁরা।

আবার পরের দিন রাজমহল থেকে নৌকা করে আসেন ঘটনাস্থলে। এই ক’‌দিনের রোজনামচা হয়ে দাঁড়িয়েছে পরিবারের। যত দিন গড়াচ্ছে, আশা বাড়ছে তাঁদের। হয়ত বেঁচেও থাকতে পারে তাঁদের সন্তান। কোনও অলৌকিক ঘটনাও ঘটতে পারে তাঁর সঙ্গে। মন খারাপরে মধ্যে একটু আনন্দের ক্ষীণ আশা নিয়ে তল্লাশি অভিযান দেখে চলেছেন তাঁরা। শনিবারও দেখা গেল তাঁদের। এদিন নিখোঁজ থাকা মন্টু শেখের বাবা সত্তরোর্ধ্ব সুক্কু শেখ সকাল হতেই এসে বসেন মানিকচক ঘাটে। তাঁর সঙ্গে পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও রয়েছেন। তাঁদের দেখভাল করছে মানিকচক থানার পুলিশ। বাবা সু্ক্কু শেখ এদিন বলেন, ‘‌৫ দিন হয়ে গেল। আমার ছেলের কোনও খোঁজ পাওয়া গেল না।

কী জানি ছেলে কোথায় যে রয়েছে। খুব কষ্টে আছি আমরা। পরিবার সবার ছোট মন্টু। ফলে সবার আদরের সে। ও যেখানেই থাকুক, আল্লা যেন ভাল রাখে।’‌ গত সোমবার মানিকচক ঘাটে লঞ্চডুবি ঘটনায় গঙ্গা তলিয়ে যায় ৮টি লরি ও ৩ জন নিখোঁজ হন। ২ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হলেও এখনও নিখোঁজ রয়েছেন মন্টু। ডুবুরিরা তল্লাশি অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দলের সঙ্গে রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দলের কর্মীরা যৌথভাবে উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

জানা গেছে এনডিআরএফ-‌এর মোট ৩৮ জন রয়েছেন। ডিআরএফ-‌এর রয়েছেন ২৪ জন। পাশাপাশি সিভিক ভলেন্টিয়ার ও পুলিশ মিলিয়ে শতাধিক কর্মী রয়েছেন এই উদ্ধার কাজে। এখন পর্যন্ত ৮টি লরির মধ্যে ৪টি লরি উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। উদ্ধার কাজ জারি রয়েছে। গঙ্গার গভীরতা ঘটনাস্থলে প্রায় ৪০ ফিট হওয়ায় উদ্ধার কাজে সমস্যা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এদিন নতুন করে লরি উদ্ধার করা সম্ভব হয় নি।

তার অন্যতম কারণ হিসেবে উদ্ধার কাজে নিযুক্ত কর্মীরা বলেছেন, উদ্ধার কাজে ব্যবহৃত লোহার দড়িটি মাঝে মধ্যেই ছিঁড়ে যাচ্ছে। ফলে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। মানিকচক থানার ওসি গৌতম চৌধুরি বলেন,‘‌পুলিশ প্রশাসন তৎপরতার সঙ্গে কাজ করে চলেছেন। উদ্ধার কাজ টানা চলছে।’‌