দুর্গা মহাভোগ খেতে আসছে 

লক্ষ্মী-সরস্বতী কার্তিক গণেশরা রাস্তায় বসে আছে

তমাল সাহা

 মা দুর্গা অনেক কিছু। কত তার নাম দুর্গতিনাশিনী দশপ্রহরণী উমা অপর্ণা গিরিবালা পার্বতী! নামের কি শেষ আছে? আর কত জোর গলায় আমরা বলি, মা আমাদের সর্বজয়া অন্নপূর্ণা অন্নদা! আমাদের হাভাতে এই পেটে এই উচ্চারণ প্রহসন ছাড়া আর কি?

মা আসবেন কৈলাস থেকে। কেন? সেখানে কি কোন লাশ নেই? এখানে এসে বলবেন, কই লাশ! কই লাশ! তিনি তো ত্রিনয়নী। দেখবেন সব জ্যান্ত লাশ পড়ে আছে ৫৭০ অথবা ৫৮০ দিন ধরে কলকাতার মাতঙ্গিনী হাজরা মূর্তির পাদদেশীয় অঞ্চলে।

ঘুষখোর লোকদেখানো দশাস্ত্র সাজে আসবেন ৬০ হাজারি প্যান্ডেলে। তিনি সব মেনে নেবেন। দুর্নীতিগ্রস্ত হাতে সর্বজ্ঞা এক তার চক্ষুদান করবেন আর শৈলজা মা তার সহ্য করে যাবেন। যোগ্য মেধা সম্পন্ন তার সন্তানেরা চাকরির জন্য আর্তনাদ করছে, তিনি এইসব দুর্গতিনাশ করবেন না। চারদিন ধরে মহাপ্রসাদ মহাভোগ বিশাল নামকরণে পেট পুরে খেয়ে যাবেন।

রাষ্ট্রীয় কলঙ্ক, রাষ্ট্রীয় অরাজকতা, রাষ্ট্রীয় মিথ্যাচারিতা, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগপত্র প্রদানের ভাঁওতাবাজি, রাষ্ট্রীয় কামাইবাজি দলনের কোনো প্রস্তুতি নেবেন না। প্রজন্মদের কর্মহীনতার প্রতিকার তো দূরের কথা, কোন প্রতিবাদই করবেন না।

এই রাষ্ট্রাসুরকে যে বধ করা উচিত, এসব চিন্তা তার মাথাতেই নেই। লোকদেখানো খেলনা অস্ত্রগুলো নিয়ে তিনি ফিরে যাবেন।

এদিকে বাংলার কবি লেখককুল শারদ ম্যাগাজিনে কবিতার গল্প প্রবন্ধ লিখে যাবেন, হিসেব করবেন কটা ম্যাগাজিনে তার লেখা বেরিয়েছে। একজন লেখকের লেখাতেও এই বঙ্গপ্রদেশের দুর্নীতির কথা, প্রজন্মদের প্রতারণার কথা খুঁজে পাবেন না। কিন্তু সবার কন্ঠে শুনতে পাবেন, সেই চলে আসা পুরনো কথা— আমরা মানুষের জন্য কলম ধরি!

 

আর আমরা বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র হয়ে প্রতিবছর মহালয়া নামের অনুষ্ঠান করব— আলোর বেণু বাজলো…

ইয়া দেবী সর্বভূতেষু বিপত্তারিণী রূপেণ সংস্থিতা নমস্তস্যৈ নমঃ নমঃ