অবতক খবর,১২ জুনঃ‌ যেমন আগুনের আঁচে রুটি না উল্টালে রুটি পুড়ে যায়, ঠিক সেইরকমই রাজনীতিতে নেতা না পাল্টালে মানুষ জ্বলে-পুড়ে যায়। এই হলো বর্তমান রাজনীতি। একই দলের নেতা-নেতারা লড়ছে,কর্মী-কর্মীরা লড়ছে। কখনো বিজেপি-তৃণমূল,কখনো সিপিএম-তৃণমূল,আবার কখনো কংগ্ৰেস-বিজেপি। লড়াই জারি আছেই বিভিন্ন দলগুলোর মধ্যে। এই যে প্রতিদিনের রাজনৈতিক যে লড়াই,তা হাতাহাতি-খুনোখুনিতেও পরিণত হচ্ছে। সবই সম্ভব এই রাজনীতিতে।

বর্তমান রাজনীতিতে এখন আবার নতুন লড়াই শুরু হয়েছে। লড়াই শুরু হয়েছে কেন্দ্রবাহিনী-রাজ্য পুলিশের। কখনো রাজ্য পুলিশ মারছে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে,আবার কখনো কেন্দ্রীয় বাহিনী মারছে রাজ্য পুলিশকে। এই তো অবস্থা। যারা নিরাপত্তার দায়িত্বে আছেন তাদের অবস্থাই যদি এইরকম হয়,তবে সাধারণ মানুষকে নিরাপত্তা দেবে কে? সাধারণ মানুষ এখন এই প্রশ্নই তুলেছেন।

সাধারণ মানুষের অভিমত, সমাজের তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরাও এখন বিক্রি হয়ে গিয়েছেন। ফলত চুপচাপ বসে তাঁরা রঙ্গ তামাশা দেখছেন। তাঁরা কোনো না কোনো দলের দলদাসে পরিণত হয়েছেন। সাধারণ মানুষ এখন বুঝতে পারছেন না যে,তারা কার কাছে যাবেন। কারণ প্রতিটি ক্ষেত্রের প্রতিটি ব্যক্তিই এখন কারোর না কারোর পক্ষপাতিত্ব শুরু করেছেন।

১০ জুন দেখা গেল এক নজিরবিহীন ঘটনা। বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা রক্ষীদের সাথে গন্ডগোল বাঁধে রাজ্য নিরাপত্তা রক্ষীদের। কেন্দ্রীয় বাহিনী বলছে রাজ্য পুলিশ প্রথমে গালিগালাজ করেছে, অন্যদিকে রাজ্য পুলিশ বলছে কেন্দ্রীয় বাহিনী আগে তাদের মেরেছে। কেন্দ্রীয় বাহিনী বলছে,উর্দি ছেড়ে মাঠে নামুন,দেখি কার কত ক্ষমতা। অন্যদিকে রাজ্য পুলিশ বলছে,গায়ে হাত দিয়ে দেখুন কার কত ক্ষমতা।

এইরকম একটা লড়াই চলছে‌। জনগণ বলছেন, রক্ষীবাহিনী এত পড়াশোনা করে যে যার দায়িত্ব পেয়েছেন। কিন্তু তাদের কাজ এই ধান্দাবাজ নেতাদের দেহ রক্ষা করা,এটা ভাবা যায়! কখনো পুলিশকে দেখা যায় একজন গুন্ডা ধান্দাবাজ নেতার সহযোগী হিসেবে কাজ করছে। অন্যদিকে ঠিক একই চিত্র দেখা যায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর ক্ষেত্রেও।

কিন্তু প্রতিদিনের জীবনযাত্রায় সাধারণ মানুষের যে এত সমস্যা, কারুর বাড়িতে চুরি হচ্ছে, কেউ খুন হয়ে যাচ্ছেন, রেলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নেই, ডাকাতি, অপহরণ ইত্যাদি যাবতীয় সমস্যা দেখবে কে? তাদের পাশে এসে দাঁড়াবে কে?

নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি, অসহায় মানুষ না খেয়ে মরছে তাদের দিকে তাকাবে কে? সেই নিয়ে কারোর কোন আলোচনা নেই,ভ্রুক্ষেপ নেই।

বিরোধী নেতারা কখনো পুলিশকে দালাল বলছে,আবার কখনো শাসক দলের নেতারা বলছে কেন্দ্রীয় বাহিনী দালাল। আসল দালাল যে কে,তা খোলাখুলি কেউই বলছে না।

পুলিশ,কেন্দ্রীয় বাহিনীকে যদি এত কিছু করেও দালাল শব্দটি শুনতে হয়,তবে বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে,তা ভাবাচ্ছে সাধারণ মানুষকে। শাসক হোক কিংবা বিরোধী,তাদের কাছে কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং পুলিশ, উভয়েই দালাল।