প্রপাগান্ডিস্ট নাট্যকার উৎপল দত্তঃ স্মরণ ও শ্রদ্ধা

দাঁড়াও পথিকবর
তমাল সাহা

দুনিয়ার রাষ্ট্রবিজ্ঞান ইতিহাস ভূগোল
তোমার দখলে এলে
তোমার চোখের সামনে
মানুষের জীবন আর সংগ্রাম ছাড়া
আর কি দেখো তুমি?

কখনো তোমাকে নেমে পড়তে হয়
সন্ন্যাসীর তরবারি হাতে
কখনো টোটা ভর্তি রাইফেল কাঁধে
বিদ্রোহের কল্লোল তুলে
তুমি ফেরারী ফৌজ হয়ে যাও।

তিতুমিরের বাঁশের কেল্লা গড়তে জানো তুমি
এ এক ভয়ঙ্কর মুখোমুখি লড়াই।
তীর হাতে নয়া তীরন্দাজ এগিয়ে চলো
কখনোবা খনিখাদানে কামিনের পাশে
অঙ্গার হয়ে জ্বলো।

লেনিনের ডাক শুনতে শুনতে
লেনিন কোথায় খুঁজতে বেরিয়ে পড়ো,
স্ট্যালিন-কেও সঙ্গে পেয়ে যাও
সময় ও রাষ্ট্রকে সংঘর্ষে নামাও।
নিচের মহলে তোমার অবাধ প্রবেশ
মানুষের অধিকারে নেমে পড়ো ময়দানে
নির্মাণ করো লাল দুর্গ, গড়ে তোল ব্যারিকেড।
তখন তুমি রীতিমতো কমরেড
লক্ষ্য তোমার জনতার ব্রিগেড।

সত্তর দশকে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসে
দেখাও দুঃস্বপ্নের নগরী,
এবার রাজার পালা-য় স্পর্ধিত উচ্চারণ ।
রাষ্ট্রীয় মুখোশ টেনে খুলে ধরো, বলিষ্ঠ উদাহরণ।
ধর্ম বিরোধী জেহাদ তোলো জনতার আফিমে
নীল-সাদা- লাল লেখা হয় বিপ্লবের রক্ত ঘামে।
টিনের তলোয়ার হাতে নাট্যকর্মীদের শপথে
অন্ত্যজ মেথর ও উদ্বাস্তু আলুউলি উঠে আসে।
আভিজাত্য টোল খায় বাস্তবতা আকীর্ণ পরিবেশে।

দিন বদলের পালায় সক্রিয় রণভূমে
পাণ্ডবের অজ্ঞাতবাসে কীচক তুমি
হিটলারীয় অত্যাচারে প্রফেসর ম্যামলক।
দাঁড়াও পথিকবর- এ তুলে ধরো
এক সংগ্রামী প্রতিভাশীল নায়ক।

‘ফ্রন্টিয়ার’- এ নিয়মিত রাজনৈতিক নিবন্ধ–
লড়াই ও সশস্ত্র সংগ্রাম
লিখে চলে এ কোন রফিকুল ইসলাম!

দাঁড়াও পথিকবর! শোনো
মানুষ কিভাবে পেরোয় যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চেতনার বৃত্ত-গোলক
হাতে তুলে নেয় এক প্রপাগান্ডিস্ট জীবনের পানপাত্রে অমৃত–হেমলক।

একেই বলে নাটকের জীবন, জীবনের নাটক!

ছবিঃ টিনের তলোয়ার নাটকে উৎপল দত্ত এবং অন্যান্যরা