অবতক খবর,১৭ এপ্রিল: বঙ্গ বিজেপিতে বিদ্রোহের সূচনা হয়েছে অনেকদিন আগে থেকেই। শীর্ষ নেতৃত্বদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন অনেকেই। আর এবার উপ নির্বাচনের ফল প্রকাশিত হয়ে আসার পর সেই ক্ষোভ আরও প্রকট হয়েছে বঙ্গ বিজেপিতে। দলের বিধায়ক তথা সাংসদ একই সুরে সুর মিলিয়ে দলের সংগঠনের দিকে আঙুল তুলেছেন। শনিবার আসানসোল ও বালিগঞ্জ উপ নির্বাচনের ফল প্রকাশ্যে আসার পরে সরাসরি দলের নেতৃত্বের উপর গাফিলতির অভিযোগ তোলেন বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ।

এবার একই অভিযোগে সরব হয়ে দলের দলীয় পদ থেকে ইস্তফা দিলেন মুর্শিদাবাদের বিজেপি বিধায়ক গৌরীশংকর ঘোষ। বঙ্গ বিজেপির বিরুদ্ধে তার ক্ষোভ যে,জয়ী হয়ে যাওয়ার পরেও বিধায়ক হিসেবে আমাকে দলে সাংগঠনিকভাবে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে না। শুধু তাই নয়, মিটিং-মিছিল হলে সেই ভাবে আমাকে ডাকা হয় না,বলে জানান বিক্ষুব্ধ বিধায়ক।

রবিবার সকালে তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন যে,সাংগঠনিকভাবে দলীয় পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছি এবং সেই চিঠি ইতিমধ্যেই রাজ্যে বিজেপি নেতৃত্বের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি।

তিনি দীর্ঘদিন রাজ্য সম্পাদক পদে দায়িত্বে ছিলেন।তিনি বলেন, দীর্ঘ দিনের প্রচেষ্টায় জেলা সাংগঠনিক যে ফাটল এবং দূরত্ব তৈরি হচ্ছিল কিছু নেতৃত্বের অভাবে তারই কিছু কিছু ক্ষেত্রে তাকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে না বলে দাবি করেন এবং অভিযোগ করেন, তিনি সব কিছু বিষয় নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বকে জানালেও রাজ্য নেতৃত্ব কোন গুরুত্ব দেয়নি এ বিষয়ে।

বিধায়ক বলেন, দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সংগঠন রদবদল হয়। আর কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নিয়েছিল প্রত্যেক মন্ডল ক্ষেত্রে সভাপতির নাম সর্বসম্মতভাবে বাছাই করা হবে। সেই মতো জেলার নেতৃত্ব বাছাই করার শুরু কাজ শুরু করে দিয়েছিলেন। সেই মতে গত ৫ই এপ্রিল রাজ্য নেতৃত্বের উপস্থিতিতে একটি বৈঠক হয়েছিল বলে জানান তিনি। আর সেখানে মুর্শিদাবাদ জেলার একান্নটি মন্ডল এর জন্য 51 জন মন্ডল সভাপতি বাছাই করার কাজ শুরু হয়।

বিধায়ক আরো বলেন, কোন এক অজ্ঞাত কারণে জেলা সভাপতি নতুন 18 জনের নাম কিভাবে নতুন করে ঢুকিয়ে ঘোষণা করে দিলেন তা আমার বিধানসভার ক্ষেত্রে আমার জানা নেই। আমি আমার এলাকায় মণ্ডল সভাপতির নাম দিলেও সেটা পরিবর্তন করে দিয়ে সেটা বাদ হয়ে যায় এবং সে ক্ষেত্রে অন্য কোন নাম প্রস্তাবিত হয় তা সত্বেও আমাকে জানানো হয়নি।
বিধায়ক আরও বলেন, যারা দাবি করছেন বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির হয়ে বিরোধিতা করেছেন তাদের ইনাম তালিকায় রাখা হয়েছে। এদিন তিনি ক্ষোভ উগরে দিয়ে প্রকাশ্যে বলেন,
আমি বিধায়ক, জিতের এসেছি। নাম বাছাই করার ক্ষেত্রে আমাদের মতামতের গুরুত্ব দেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু সে ক্ষেত্রে সাংগঠনিকভাবে কোনরকম আমাদের মতামত নেওয়া হয়নি দলীয়ভাবে।
দীর্ঘদিন ধরে কাজ করার অভিজ্ঞতা সত্ত্বেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছিল না বলে অভিযোগ করেন তিনি। সমান্তরাল সাংগঠনিক সংগঠন তৈরি করার কাজ করার হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন তিনি। তাঁর কথায়,যেখানে আমার মতামত নেয়া হয় না সেখান থাকার আমার কি দরকার।
শনিবার সৌমিত্র খাঁ সরাসরি বঙ্গ বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব, রাজ্য নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। তাঁর দাবি, অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও দায়িত্ব পেয়েছেন অনেকেই। নেতৃত্ব যারা রাজ্য সরকারের বিরোধিতা নিয়েই সু একাধিক ভাবে বিক্ষোভ মিছিল করে লড়াই দিয়েছেন তাদেরকে এখন গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে না, দলীয়ভাবে এমনটাই মন্তব্য করেন সাংসদ তিনিও।