অবতক খবর,২৩ নভেম্বরঃ তুলাই পাঞ্জি নামটা আজ জগত বিখ্যাত। সুগন্ধী যুক্ত এই চালের গরম ভাতে একটু ডাল হলেই ষোল কলা পূর্ণ। মন ভরে যায় ভজন রসিক বাঙালির। তবে শুধু বাঙালি বললে ভুল হবে আজ দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশের মাটিতেও তুলাই পঞ্জি চাল বিশেষভাবে সমাদৃত। আর এই চালের সুনামের সাথে সাথে সারা বিশ্বজুড়ে উজ্জ্বল হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নাম। কমবেশি আমরা সকলেই জানি এই চালের উৎস পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ ব্লকের মোহিনী গঞ্জ গ্রাম। আজ থেকে প্রায় 40 বছর আগে এই চালের উৎপাদন প্রথম শুরু করেন এই গ্রামের কৃষকেরা। প্রথমদিকে হয়তো এতটা সাফল্য আসবে এমনটা ভাবতেই পারেনি কৃষকরা।

কিন্তু তারপর ধীরে ধীরে এই চালের জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ে। এখন বদলে গিয়েছে সময় বদলে গিয়েছে সমাজব্যবস্থার চালচিত্র। কিন্তু মোহিনীগঞ্জের তুলাই আজও স্বমহিমায় বিরাজ করছে। যার রেকর্ড এখনো ভাঙ্গা সম্ভব হয়নি। দিনকে দিন এই চালের চাহিদা বেড়েছে। আর এর সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে উৎপাদন। কৃষকরা উৎসাহিত হয়ে বৃহত্তর পরিসরে চাষাবাদ শুরু করেছেন। মাঝে এক সময় অত্যাধিক দাম বৃদ্ধির জেরে এই চালের চাহিদা কিছুটা স্তিমিত হলেও বর্তমানে তা নিয়ন্ত্রণে। মহিনীগঞ্জ সহ এলাকাগুলিতে গড়ে প্রায় ৯০% কৃষক এখন এই চালের উপর নির্ভরশীল। কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকার ও এই চালের উপর বিশেষ নজর রেখেছে। ২০১২ সালে এই চালকে লন্ডনের অলিম্পিকের ফুড ফেস্টিভিলে পাঠানো হয়েছে। কৃষকরা জানান এই চাল উৎপাদন করে তারা এখন ভীষণ লাভবান হচ্ছেন। আর্থিক সমস্যা দেখা দিলে তৎক্ষণাৎ সরকারিভাবে ঋণের সুবিধা পাচ্ছেন কৃষকরা। এক বিঘা জমিতে প্রায় চার কুইন্টাল ফলন হয়। চাষের খরচের পরিপ্রেক্ষিতে যা যথেষ্ট বলে দাবি কৃষকদের।

সব মিলিয়ে তুলাইপাঞ্জি চালের উপর ভর করে রায়গঞ্জ ব্লক আজ দেশ-বিদেশের মানুষের কাছে পরিচিতি লাভ করেছে। আগামীতে এই চালের কদর আরো প্রসারিত হবে বলে আশাবাদী কৃষকরা।