অবতক খবর,২২ অক্টোবর,পূর্ব মেদিনীপুরঃপূর্ব মেদিনীপুর জেলার তমলুক ব্লকের খারুই গ্রামের চন্ডীরুপি কালী মায়ের মন্দির। দীর্ঘ ২৫০ বছরের প্রাচীন এই মন্দির। কখনো দুর্গা এবং কখনো চন্ডী রূপে পূজিতা হন খারুই গ্রামের মা কালীকে।গল্পগাথা আর ঐতিহ্যে ভরা এই মন্দির।এই মন্দিরের গল্পগাথায় ঢ়া উঠেআসে তা হল, তৎকালীন সময়ে এলাকায় বর্গী নিধান হয়েছিল এই মায়ের হাত ধরে। শোনা যায় সে সময় মন্দিরের কাঠামো ছিল মাটির তৈরি এবং একাধিক সোনার গহনা থাকত মায়ের গায়ে। সেই গহনা চুরি করতে এসে মন্দিরের সামনেই লুটিয়ে পড়ে একদল বর্গীরা। এবং অন্ধ হয়ে মন্দিরের সামনেই বসে থাকতে দেখেন গ্রামবাসীরা।

পরক্ষনে গ্রামবাসীদের পরামর্শে মায়ের কাছে মানত করে চোখের দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেয়ে ছিলেন ওই বর্গীরা,এমনি লোকমুখে কথিত হয়ে রয়েছে।পরে তারা তাদের যাবতীয় অস্ত্রশস্ত্র মায়ের কাছে নিবেদন করে ঐ বর্গীরা দুষ্কর্ম ছেড়েদেন এবং সাধারণ মানুষের মতো জীবনযাপন করতে শুরু করেন। বর্গিদের দেওয়া সেই অস্ত্রশস্ত্র এখনো প্রাচীন অস্ত্র হিসাবে বর্তমান রয়েছে মন্দিরের মধ্যে। শুধু তাই নয় আরও একটি বিশেষত্ব রয়েছে এই মন্দিরের মায়ের আশীর্বাদে বহু বধির ছেলে মেয়ে ফিরে পেয়েছে তাঁদের বাক্ শক্তি। একাধিক বধির শিশুদের পরিবার ওল দিয়ে মায়ের কাছে মানত করেন এবং ফিরে পায় বাক্শক্তি। কথা না বলতে পারা শিশুর মুখে কথা বলার শক্তি ফিরে পায় তাই এখনো বছরে বহু মানুষ ওল নিয়ে শিশুদের বোল ফোটানোর আশায় নানত করে পুজো দেন। সেই কারণেই খারুই গ্রাম সহ পার্শ্ববর্তী বেশ কিছু গ্রামের মানুষ জাগ্রত মা হিসেবেই দেখেন চণ্ডী রুপি এই কালিমাকে। কালী পুজোর দিন হাজারো হাজারো মানুষের ভিড় জমে এই মন্দিরকে ঘিরে। চণ্ডী এবং দুর্গারূপী কালী মায়ের এই মূর্তি গ্রামবাসীদের কাছে এক অনবদ্য প্রতিকৃতি, তাই গ্রামের প্রতিটা বাড়ির যে কোনো অনুষ্ঠান শুরু হয় মায়ের ভোগ দিয়ে। বছরের প্রতিটা দিন মায়ের ভোগে থাকে ভাত বিভিন্ন তরিতরকারি এবং মাছের ঝোল। সিঙি মাছ মায়ের প্রধান খাদ্য হলেও বর্তমানে সেই মাছের অভাব থাকায় রুই ও কাতলার ঝোল দিয়ে ভোগ দেন পুরোহিতেরা।

কালীপুজোর দিন সারা রাত ধরেই চলে মায়ের যাজ্ঞ যজ্ঞ পুজো এবং বলিদেওয়ার নিদান রয়েছে এই মন্দিরে। জাগ্রত মায়ের আশীর্বাদ পেতে কালি পূজোর দিন হাজারো হাজারো মানুষ ভিড় করেন এই মন্দির চত্বরে।তাই এলাকাবাসীর কাছে খারুই গ্রামের চন্ডী রূপে কালীর পুজো মহামারহেই হয়ে থাকে।