অবতক খবর,সানোয়ার হোসেন , দক্ষিণ ২৪ পরগনা :- গত ১৬ অক্টোবর সকালে জয়নগর থানার ধোসা এবং রাজাপুর এর মধ্যবর্তী এলাকার গোদাবর চনাগুরি খালের পাশে একটি মুণ্ডহীন মহিলার মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। ঐ সকালেই পাশের খালে জাল ফেলে একটি মহিলার মুণ্ডও উদ্ধার করে পুলিশ।হতভাগ্য মেয়েটির পরিচয় জানবার জন্য পুলিশ আশেপাশের সমস্ত থানা ও জেলায় ছবিসহ খবর দেয়। শেষমেশ মন্দিরবাজার এলাকা থেকে মেয়েটিকে শনাক্ত করে তার বাড়ির লোক। নাম আলেয়া বিবি। এক্ষেত্রে পুলিশের নিজস্ব সোর্স কাজে লাগানো হয়। মেয়েটি শনাক্ত হবার পরে পুলিশ ঝাঁপিয়ে পড়ে মেয়েটির বিষয়ে সমস্তরকম তথ্য সংগ্রহ করতে এবং শীঘ্রই জানা যায় যে কুলতলির মেরিগঞ্জের বাসিন্দা ফরমান লস্করের সাথে তার একটা সম্পর্ক ছিল। আর জানা যায় যে আলেয়াকে তার বান্ধবী মনিরা নামক মন্দিরবাজার এলাকারই একটি মেয়ে বাড়ির থেকে ডেকেছিল গত ১৪ অক্টোবর, তারপর থেকেই আলেয়া বাড়ি ফেরেনি। মনিরার বাড়িতে খোঁজ করে জানা যায় সে বাড়িতে দু তিনদিন ধরেই অনুপস্থিত।

এরপরেই বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে বারুইপুর জেলার জয়নগর থানার পুলিশ টিম , একাধিক জায়গায় খোঁজ চালাতে থাকে এবং জাল পাতে ফরমান ও মনিরাকে ধরবার জন্য।সাফল্য আসে দ্রুতই।গতকালই ধরা পড়ে ফরমান এবং মনিরা। জেরায় স্বীকার করে খুনের কথা। তিন সন্তানের মা চল্লিশোর্দ্দ্ব আলেয়া ভালবাসত ফরমানকে। চেয়েছিল বিয়ে করতে। এদিকে মনিরাও চাইত ফরমানকে নিয়ে আলাদা বিয়ে করে থাকতে। একাধিক সম্পর্কে যুক্ত ফরমান আগেই বিবাহিত, মেরিগঞ্জে। তবুও অবৈধ সম্পর্কের নিষিদ্ধ আনন্দ উপভোগ করতে পিছপা হয়নি। এরপর ফরমান ও মনিরা ছক কষে আলেয়াকে পথ থেকে সরিয়ে দিয়ে দুজনে ভিনরাজ্যে চলে যাবে। যেই ভাবা সেই কাজ। মনিরা ডেকে আনে আলেয়াকে জয়নগরে। তারপর বধ্যভূমিরূপ গোদাবর চানাগুরি খালের কাছে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে ফরমান, মুণ্ড কেটে পাশের খালের জলে ফেলে দেয় মৃতার পরিচয় গোপন রাখবার জন্য এবং একাজে তার আর এক সঙ্গী আতিয়ার নামক একটি ছেলে।ফরমান এবং মনিরা ভিনরাজ্যে গা ঢাকা দেবার আগেই পুলিশের জালে এইভাবে ধরা পড়ে যাওয়া ,বারুইপুর পুলিশ জেলার সাম্প্রতিক বেশ কয়েকটি সাফল্যের মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা।