অবতক খবর,২৩ ফেব্রুয়ারি: গত ১৬ ফেব্রুয়ারী সন্ধায় নিজের বাড়িতে নৃশংস ভাবে খুন করা হয় আট বছরের শিশুকে।ঘটনার চারদিন পর গ্রেফতার করা হয় শিশুর মা শান্তা শর্মা ও তার বান্ধবী ইফ্ফাত পারভিনকে।শ্রীরামপুর আদালত তাদের নয় দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয়।অভিযু্ক্তদের পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।পঙ্কজ শর্মার সঙ্গে শান্তার বিয়ে হয় ২০১২ সালে।বিয়ের সময় থেকে পঙ্কজের মাথায় টাক ছিল।যা পছন্দ ছিল না শান্তার।বিয়ের পর এনিয়ে দুজনের অশান্তিও হত।একে স্বামীর সঙ্গে মনের মিল নেই অন্যদিকে সংসারে আর্থিক স্বচ্ছলতার অভাব।দুই এর সুযোগে পারভিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে।

পুলিশ দুজনের মোবাইল ঘেঁটে কিছু ছবি পায়।যেখানে একটি ছবিতে দুজনের হাতেই চুরি দেখা যায়।শান্তার স্বামী পুলিশকে জানিয়েছিল শান্তা কোনোদিনও চুরি পরত না।

২০১৮ সালে পারভিনের বিয়ে হয়েছিল।মাস খানেকের মধ্যে বিয়ে ভাঙে তার।এরপরের বছর কলকাতার একটি মন্দিরে দুজনে মালা বদল করে।

পঙ্কজ জানিয়েছেন তার স্ত্রী ও পারভিন বছর দুয়েক আগে দিল্লী গিয়েছিল।তখন ছেলেকে সঙ্গে নেয়নি।গত বছর বিহারে গিয়েছিল ছেলে ছিল সঙ্গে।তবে পারভিনের বাড়িতে ছেলেকে আলাদা রেখে এক ঘরে রাত কাটায় শান্তা ও পারভিন।সে কথা শিশু তার বাবাকে জানিয়েছিল।

কানাইপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান আচ্ছেলাল যাদব জানিয়েছেন শান্তা পারভিনের সম্পর্কের কথা পরিবারও জানত।কিন্তু সামাজিক সম্মানের কথা ভেবে কিছু বলত না।

নিজেদের সম্পর্কে ছেলে বাধা হচ্ছিল তাই কু মাতা হতে শান্তা নিজের ছেলেকে খুনের পরিকল্পনা করে।পরিকল্পনা যে করেছিল তা স্পস্ট।পুলিশ জানিয়েছে শান্তা আর পারভিন দিনে অনেকবার ফোনে গল্প করত।কিন্তু ঘটনার দু দিন আগে থেকে তাদের ফোনে যোগাযোগ ছিল না।মোবাইল কল রেকর্ড দেখে পুলিশের সন্দেহ হয়।যারা দিনে কুড়ি বার ফোন করে।তাদের ফোন দু দিন বন্ধ কেন।তার মানে তারা জানত ঘটনার পর পুলিশ ফোনের সূত্র থেকে তথ্য সংগ্রহ করবে।দু দিন কোনো যোগাযোগ নেই এটা প্রমান করতেই ফোনালাপ বন্ধ রাখে তারা।ঘটনার দিনও বেলা তিনটের সময় পারভিনের মোবাইল টাওয়ার লোকেশান ছিল ওয়াটগঞ্জ। আবার রাত সারে আটটায় সেই একই লোকেশানে ছিল।মাঝে ফোন বন্ধ ছিল।তবে সন্ধা ছটা থেকে সারে ছটা নাগাদ শিশুকে খুন করা হয়।তার মিনিট পনেরে আগে শান্তা ও পারভিনের কথা হয় তার সূত্র পেয়ে যায় পুলিশ।

ওই সময়ে আদর্শনগর ইংলিশ রোড দিয়ে মাস্ক পরা এক যুবতী হেঁটে যাওয়া ধরা পরে সিসি ক্যামেরায়।

শান্তা একটি ফুড কোর্টে কাজ করতেন।পরিকল্পনা মাফিক সেদিন কাজে যান।দোকানে গিয়ে ডলি নামে প্রতিবেশি এক মহিলাকে দিয়ে বাড়িতে ছেলেকে খবর পাঠান তার চশমা দিয়ে যেতে।ছেলে মাকে চশমা দিয়ে বাড়ি ফিরে টিভি চালিয়ে কার্টুন দেখতে বসে।সে সময় আততায়ী ঘরে ঢুকে শিশুকে মাথা থেঁতলে খুন করে।

শান্তা তার বান্ধবীর প্রতি আশক্ত যে সন্তান খুনে অভিযুক্ত হলেও বান্ধবীর পক্ষে দাঁড়ান।নিজে নির্দোষ তাও দাবী করেন।যদিও শান্তার স্বামী পঙ্কজ শর্মা অভিযুক্তদের ফাঁসির সাজা চাইছেন।