কাল সারাদিন চ্যাপলিনের সঙ্গে থাকার পর কী কথা হলো তোমরা শোনো

চ্যাপলিন ও আমি
তমাল সাহা

এ বিষয়টা সকলেই জানে চ্যাপলিন বৃষ্টির মধ্যে কাঁদেন কেন।
তা তিনি সোজা ভাষায় বলে গিয়েছেন।

তবে চ্যাপলিনের সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল এবং প্রায়শই দেখা হয়
গেরস্থালি অনেক কথাই তার সঙ্গে আমার হয়।

আমি বলি, তুমি তো কান্নার কথা বলেছ হাসির কথা তো বলো নি!
সে বলে, যখন বজ্রপাত হয় বিদ্যুৎ চমকায় কড়াৎ কড়াৎ মেঘের আওয়াজ হয় তখন আমি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অট্টহাসি করি যাতে রাষ্ট্র না বুঝতে পারে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আমার উচ্চারণ।

আমি তখন বলি, তাহলে তুমি হানার কাছে ভালোবাসার হাসি হাসো কেমন করে?

সে বলে, হানার কাছে কোনোদিন তো আমি হাসিনি।
একটা প্রস্ফুটিত গোলাপ আমি হানার সামনে ধরেছি পাপড়িগুলো ওর ঠোঁটের মতো ডানা মেলে আছে।
আর আমি আমার দাঁতের পাটি দুটো একটু চেপে বসিয়ে দিয়েছি তাতেই বোঝা গেছে আমার হাসি,
এই ভীষণ দুঃসময়ে আসল হাসি হাসা যায় না!

আমি বলি, তুমি ওই ঢলঢলে পোশাক পরো কেন?
সে বলে, রাষ্ট্র আসলে ঢিলেঢালা পোশাকই পরে থাকে। তাকে সহজেই উলঙ্গ করা যায় সেটা বোঝাতে।
তুমি তো দেখেছো মাঝে মধ্যেই আমি আমার পরনে নিচে নেমে যাওয়া ঐ প্যান্টটাকে টেনে উপরে তুলি।
তাহলে ওই রকম বড় মাপের জুতো পরে আঁকা বাঁকা হাঁটাচলা করো কেন?
আসলে রাষ্ট্র বিকলাঙ্গ, ভালো ভাষায় প্রতিবন্ধী তা বোঝাতে!

কিন্তু ওই ছোট গোঁফটি রেখেছো কেন?
আরে ডিক্টেটরশিপকে ব্যঙ্গ করতে আমিও গোঁফ রাখতে পারি এটা তো সেই হিম্মত!

মাথায় তো টুপিও পরো?
আরে, টুপি তো প্রতীক!
রাষ্ট্র টুপি পরিয়ে তোদের ভোট কিনছে!

তাহলে হাতের ছড়িটি!
ওটাই তো আসল হাতিয়ার— প্রতীকী।
অস্ত্র ছাড়া যুদ্ধ হয় নাকি?

তবে মূকাভিনয় করো কেন?
আরে! মুখর সরব অভিনয় যে আছে, আর সেটা যে আছে পেছনে,পরে হবে ময়দানে তা বোঝাতে আপাত এই কৌশল নিতেই হয়। শত্রুকে ধোঁকা দিতে হবে যে!