অবতক খবর,১০ সেপ্টেম্বরঃ – শহরে ফের উদ্ধার বিপুল টাকা।কয়েক ঘণ্টা তল্লাশির পরে পাহাড়প্রমাণ এই টাকার সন্ধান পাওয়া গিয়েছে বলে খবর।গার্ডেনরিচে পরিবহণ ব্যবসায়ী নিসার খানের বাড়ি থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার করলেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট আধিকারিকরা। সূত্রের খবর শনিবার সকালে নিসারের দোতলা বাড়ির খাটের তলা থেকে প্লাস্টিকের থলিতে মোড়া ৫০০ এবং দু হাজার টাকার অসংখ্য নোটের বান্ডিল পাওয়া যায়। এই বিপুল টাকা গোনার জন্য যন্ত্র আনা হয়। তবে আনুষ্ঠানিক ভাবে এখনও কিছু জানায় নি ইডি আধিকারিকরা।

শনিবার সকালে গার্ডেনরিচের ই সেভেনে নিসার খানের ফ্ল্যাটে হানা দিয়ে খাটের তলায় প্লাস্টিকের ব্যাগে থরে থরে সাজানো রয়েছে ৫০০ এবং ২০০০ টাকার বান্ডিল দেখে হতভম্ব হয়ে যান আধিকারিকরা। সূত্রের খবর আনুমানিক মোট ৫ কোটি টাকার নোট উদ্ধার হয়েছে। তবে এখনও চলছে নোট গোনার কাজ।পরিবহণ ব্যবসায়ী নিসারের নিউটাউন, তারাতলা হাইড রোডে অফিস রয়েছে বলে সূত্রের খবর। নিউটাউনের অফিসে তল্লাশি চালান ইডি আধিকারিকরা। মোবাইল অ্যাপ সংক্রান্ত প্রতারণার একটি মামলায় শনিবার এই তল্লাশি অভিযান শুরু করে ইডি।

নিসারের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া ওই বিপুল অর্থ প্রথমে বাজেয়াপ্ত করবেন ইডি আধিকারিকরা। তারপর তা গোনার জন্য ব্যাঙ্কের আধিকারিকদের সাহায্য নেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই গার্ডেনরিচের ওই বাড়িতে বাড়তি ফোর্স চেয়ে পাঠিয়েছে ইডি। দুপুর নাগাদ গার্ডেনরিচের শাহি আস্তাবল গলিতে নিসারের বাড়ির বাইরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের মোতায়েন করা হয়।শনিবার সকাল সাড়ে ৮ টা নাগাদ কলকাতার চার জায়গায় একযোগে তল্লাশি অভিযান শুরু করেন ইডির আধিকারিকেরা। পার্ক স্ট্রিটের কাছে ম্যাকলয়েড স্ট্রিটের পাশাপাশি নিউটাউন, মোমিনপুরে বন্দর সংলগ্ন এলাকায় এবং গার্ডেনরিচের শাহি আস্তাবল গলিতে অভিযানে নামেন তাঁরা। সূত্রের খবর অভিযান শুরু হওয়ার ঘণ্টা তিনেক পর গার্ডেনরিচে ওই পরিবহণ ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে প্রচুর পরিমাণ নোটের বান্ডিল পাওয়া যায়। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে যে ওই টাকার পরিমাণ কয়েক কোটি ছাড়িয়ে যাবে।

শনিবার দুপুর ১ টা নাগাদ ইডির আরও আধিকারিক নিসারের বাড়িতে ঢোকেন। কেন্দ্রীয় বাহিনীর সামনে নিসারের বাড়িতে আরও এক প্রস্ত চিরুনী তল্লাশি শুরু হয়। ওই টাকার উৎস কী, তাঁর যদিও এখনো কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি ওই ব্যবসায়ী। এমনকি ওই টাকার সংক্রান্ত কোন বৈধ নথিপত্রও তিনি দেখাতে পারেননি বলে সূত্রের দাবি। শনিবার সকালে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে ইডির তিনটি প্রতিনিধি দল সিজিও কমপ্লেক্স থেকে বেরোয়। ওই প্রতিনিধি দলে রয়েছেন দুই মহিলা আধিকারিকও। প্রথমে পার্ক স্ট্রিট লাগোয়া ম্যাকলয়েড স্ট্রিটের ৩৬ বাই ওয়ান এবং ৩৬ বাই ওয়ান টুর একটি আবাসনে হানা দেন তাঁরা। সেখানে এক আইনজীবীর ফ্ল্যাটে বেশ কিছুক্ষণ ধরে চলছে তল্লাশি। ম্যাকলয়েড স্ট্রিটের পাশাপাশি এদিন সাতসকালে গার্ডেনরিচেও হানা দেন ইডি আধিকারিকরা। সেখানে এক ব্যবসায়ীর ফ্ল্যাটে চলছে জোর তল্লাশি। মোমিনপুরে ১৪ নম্বর বিন্দুবাসিনী স্ট্রিটে এক কাপড় ব্যবসায়ীর ফ্ল্যাটেও অভিযান ইডি’র। বর্তমানে ওই বস্ত্র ব্যবসায়ী ফ্ল্যাটে নেই। ঠিক কী কারণে ম্যাকলয়েড স্ট্রিট এবং গার্ডেনরিচ এবং মোমিনপুরে তল্লাশি চালাচ্ছেন ইডি আধিকারিকরা, তা এখনও স্পষ্টভাবে জানা যায়নি।

উল্লেখ্য গত জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে গ্রেপ্তার হন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। ইডি আধিকারিকরা প্রাক্তন মন্ত্রী ঘনিষ্ঠের দুটি ফ্ল্যাট থেকে প্রায় ৫০ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করে। এছাড়া বিদেশি মুদ্রা, সোনার গয়নাগাটি বাজেয়াপ্ত করা হয়। এবার গার্ডেনরিচের ফ্ল্যাটে টাকার হদিশ পেল ইডি।