অবতক খবর,১ ফেব্রুয়ারি, নদীয়া:- সরকার আছে নিয়মে , সুলতা আছে ছাত্র ছাত্রীদের মনে ।করোনা পরিস্থিতিতে বর্তমানে স্কুল , কলেজ সহ সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ।এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার গ্রামবাংলার ছাত্র ছাত্রীরা ।স্কুলের গেটে তালা,সেখানে নেই পঠনপাঠন। কিন্তু তাতে কি? গ্রামে দিদিতো আছে ?গ্রামের ছাত্র ছাত্রীদের কথা ভেবে সেই দিদি গ্রামের চালু করেছেন অভিনব বিদ্যালয় ।

সেই বিদ্যালয়ে প্রতিদিন বিকালে বসে ।করোনা বিধি মেনে ছাত্র ছাত্রীদের বিনামূল্যে শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছেন।বর্তমান পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে সকল স্থানে স্কুল কলেজ বন্ধ।সকল ছাত্র-ছাত্রী পড়াশোনা একবারেই ভোলার পথে। এমন পরিস্থিতিতে নদীয়ার কৃষ্ণগঞ্জের শিবনিবাসের বাসিন্দা সুলতা হালদার নামে এক তরুণী তৈরি করলেন নিজস্ব স্কুল। তার ৯বছরের একটি ছেলে রয়েছে। যদিও বাড়িতে সেলাই মেশিনে পুরনো জামা কাপড় সেলাই করে সংসার চলে কোনরকমে। তবে অভাব থাকলেও গ্রামের ছেলেদের পড়াশোনা করানো তার মানসিক ইচ্ছে ছিল বরাবরই ।কারন,তার এলাকার আশেপাশে যেসব গ্রামে সাধারণত দুঃস্থ পরিবারের ছেলেমেয়েদের প্রাইভেটভাবে পড়াশোনা করার পরিস্থিতি নেই, সুলতাদেবী তাদের নিয়েই শিবনিবাস মন্দিরের মাঠ প্রাঙ্গণে শুরু করলেন এই নিজস্ব স্কুল।

এখানে মোট ৪৫থেকে ৫০জন ছাত্র-ছাত্রী পড়াশোনা করে। পড়াশুনার পাশাপাশি তাদের শরীরচর্চা,যোগব্যায়ামের শিক্ষা দেওয়া হয়। এছাড়াও এ বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীদের বিনামূল্যে বই,খাতা পেন ইস্কুলের সরঞ্জাম দেন । সেগুলো গ্রাম বাসিরা ছাত্র ছাত্রীদের বিনামূল্যে দেবার জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন ।এমন স্কুল খোলার একটি কারণ,ওই তরুণীর বিয়ে হয়েছিল এবং বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই তাদের স্বামী-স্ত্রীর বনিবনা না হওয়াতে দুজনে বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যায়।সে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে।তার কিছুদিন পর থেকেই তার মনের ভেতরে একটা ইচ্ছার প্রকাশ পায়।

তিনি মনে করেন,নিজের ছেলেকে পড়াতে গেলেও তো তার কিছু সময় ব্যয় করতে হত, তাই আশেপাশের যারা দুঃস্থ শিশুরা আছে, যাদের মা-বাবা ঠিকমতো পড়াতে পারে না, তাদের নিয়েই তিনি শুরু করবেন এই নিজস্ব স্কুল। দীর্ঘ দিন প্রচেষ্টায় আজ সকলের মুখে মুখে এই স্কুলের কথা । এই প্রচেষ্টাকে সকলেয় সাধুবাদ জানিয়েছেন ।নদীয়ার পুরানো দিনের ঐতিহ্য আজ আবার সকলের মনে জাগরীত । সেই প্রবাদ বাক্য নদীয়া থিঙ্কস টুড়ে , ইন্ডিয়া থিঙ্স টুমরো ।শিবনিবাস থিঙ্কস টুড়ে , বেঙ্গল থিঙ্কস টুমরো ।সাধারণ জনগণ সুলতা দেবীর এই মহান কাজের প্রশংসা করেছেন । আমরাও সুলতা দেবীর এই উদ্যোগকে কুর্নিশ জানায় ।