অবতক খবর,১৪ মে: কাঁচরাপাড়া ১৯ নং ওয়ার্ড স্থিত খাটালের ঠিক পেছনে একটা বড় পুকুর ছিল। অঞ্চলের হিন্দিভাষী মায়েরা সেখানে ছট্ পুজো করতেন। শুধু অঞ্চলেরই নয়, সেখানে মানুষ পুজো করতে আসতেন দূর-দূরান্ত থেকে। গতবছর ছট্ পুজোর সময় তৃণমূল জেলা সাধারণ সম্পাদক থাকাকালীন সুবোধ অধিকারী সেখানে পরিদর্শনে গিয়েছিলেন এবং ওয়াদা করেছিলেন যে,এই পুকুরটি সুন্দরভাবে বাঁধিয়ে দেওয়া হবে,যাতে মায়েরা ভালোভাবে পুজো করতে পারেন। তাঁর এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় মানুষ।

কিন্তু আজ হঠাৎ দেখা যাচ্ছে যে,ওই পুকুর একবারেই শুকনো।পুকুর শুকানোর কাজ বহুদিন ধরেই চলছিল, তা পুকুর দেখেই বোঝা যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, সেটি অর্ধেকের বেশি ভরাট হয়ে গিয়ে ঘর তৈরি শুরু হয়েছে এবং পুকুরের ধারের জমিগুলি বিক্রিও হয়ে গেছে।

স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গেছে,কাঁচরাপাড়া সূর্যনগর কলোনির বাসিন্দা মৃৎশিল্পী অমর পালের পুত্র বাবু পাল এই পুকুর কিনেছেন।

পুকুর সংলগ্ন বাড়ির মালিক নির্মল কুন্ডু(কাঞ্চা), তিনিও ওই পুকুরের বেশ কিছুটা ভরাট করে বেশ খানিকটা জায়গা নিয়ে পাঁচিল তুলে দিয়েছেন।

কিন্তু স্থানীয় যারা সেখানে পুজো করতেন তাদের মাথায় এখন হাত পড়েছে। তারা ভেবেই কুল করতে পারছেন না যে এটা হল কিভাবে? যখন এই পুকুর ভরাট শুরু হয়,সেই সময় স্থানীয়রা একজোট হয়ে থানা প্রশাসনের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করেছিলেন। তা সত্ত্বেও বিনা বাধায় এই পুকুর ভরাট হয়ে গেল। এখন যে অর্ধেক পুকুর ভরাট হওয়া বাকি স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, এটিও খুব শিগগিরই ভরাট হয়ে বিক্রি হয়ে যাবে। এখন প্রশ্ন, তাহলে স্থানীয়রা পুজো করতে যাবেন কোথায়?

এখন তারা তাকিয়ে রয়েছেন অঞ্চলের বিধায়কের দিকে। তিনি এর একটা ব্যবস্থা করতে পারেন বলে তাদের বিশ্বাস। কারণ গত বছরই তিনি এই পুকুর বাঁধিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিলেন। তারা বলেন, এই কোভিড পরিস্থিতিতে বিধায়কের নজরে বিষয়টি আসেনি, আর আমরাও তাঁর কাছে যেতে পারছিনা। তাই আমরা আপনাদের সংবাদ মাধ্যমের মাধ্যমে তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছি। যাতে বিষয়টি তাঁর নজরে আসে এবং পুকুরটি পুনরুদ্ধার হয়।

এদিকে মৃৎশিল্পী অমর পালের পুত্র বাবু পাল আগে কেবলের ব্যবসা করতেন। কিন্তু এখন তিনি বড় বড় পুকুরগুলো কিনে সেগুলো ভরাট করে বিক্রি করে। ঠিক এইরকমই ১৯ নং ওয়ার্ডের বিখ্যাত জোড়া ছট্ পুকুর তিনি কিনে নিয়েছেন। আর ভরাট করে বিক্রি শুরু করে দিয়েছেন। কিন্তু ‌তিনি এই যে‌ বেআইনি ব্যবসা করছেন এর বিরুদ্ধে কি প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেবে? নাকি তিনি এই ভাবেই একের পর এক পুকুর ভরাট করে চালিয়ে যাবেন তার ব্যবসা? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন স্থানীয় মানুষজন।