ক্ষুধায় সূচকে বাংলাদেশ পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে ভারত–১০৭ঃ আজ বিশ্ব খাদ্য দিবস

দিন নাচে রাত্রি নাচে

পেট ঘুমিয়ে আছে খিদের আঁচে।

মায়ের চুপসানো মাই মুখে দিয়ে শিশু নড়েচড়ে

পাশে চুপচাপ শুয়ে আছে হাড্ডিসার বাপে

ওরা খিদে কি দিয়ে মাপে!

আজ বিশ্ব খাদ্যদিবস।

তমাল সাহা

দীর্ঘ আনুভূমিক ছায়া পড়ে মানুষের মুখে। ঘনতম রাত্রি নেমে এলে মানুষ আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে। মিটমিট করে নক্ষত্রগুলি জ্বলে তাদের ভাবনাগুলিও ঘুরে যায় তাদের মস্তিষ্কের ভিতর।

সূর্যকে পৃথিবী প্রদক্ষিণ করলেও পৃথিবীর মানুষ হা পিত্যেশে একবার মাটির দিকে আরেকবার রাষ্ট্র পরিচালক নেতাদের দিকে তাকায়। তারপর একদৃষ্টে চেয়ে থাকে রাষ্ট্রপুঞ্জের সদর দপ্তরের দিকে। তারা কান পেতে শোনে। পর্যায়ক্রমে ঘোষিত হয় এক একটি দিবস।

সব দিবস ঘোষণা হয়ে গেলে তারা নিজেদের পেটের দিকে চায়। খিদের বিশাল গহ্বর তারা পরখ করে। তারা ভাবে বিশ্ব খিদে দিবস এবং দারিদ্র্য দূরীকরণ দিবস দুটি আলাদা কেন? যেহেতু তারা পিছড়ে বর্গের আনপড় মানুষ তথাকথিত ভদ্রলোকদের বর্ণমালা তারা এখনও শিখতে পারেনি তাই তারা প্রশ্ন করতে দ্বিধা করে নিশ্চুপ হয়ে থাকে। সরব হতে পারে না। দারিদ্র্য দূরীকরণ হলেই তো মিটে যায় খিদের সমস্যা এইটুকু তারা সহজ বুদ্ধিতে বোঝে।

 

অনাদি অনন্তকাল থেকে পৃথিবী সৃষ্টি হলেও খিদে কেন থেকে যায়! গরীবিয়ানা কেন থেকে যায় এ দুটির সহাবস্থান কেন — তারা বোঝে না। তারা বোঝে না যুদ্ধ বাধিয়ে কেন বিশ্ব শান্তি দিবস পালন করা হয়। তারা বোঝেনা নারী নির্যাতন করে কি করে নারী দিবস পালন করা হয়!

অর্থনীতির যতসব বড় বড় শব্দ, বাজেট, GDP, তারা জানে না। তারা শিখতেও চায় না। কারণ খিদে এবং দারিদ্র্য দূর করতে এসব শব্দগুলি কোনো কাজে লাগেনা। এসব বড় বড় মাথার কান্ড। তারা হিসেব নিকেশ করে। সেই পৃথিবীর সৃষ্টিকাল থেকেই এবং সেই হিসাব চলতেই থাকে কিন্তু খিদেও মেটে না বা দারিদ্র্য দূরীকরণ হয় না। আর একদিন খিদে দিবস বা একদিব মাত্র দারিদ্র্য দূরীকরণ দিবস পালন করে কেন মসকরা হয়? এই মস্করা করে কারা? কাদের দিকে তাকিয়ে এই মস্করা তারা তাও জানে না।

তাদের প্রশ্ন বিশ্ব খাদ্য দিবস বা দারিদ্র্য দূরীকরণ দিবস পালনের কার্যকাল বা সময়কাল কতদিন পর্যন্ত? তা কি অনন্তকাল ধরেই চলতে থাকবে? রাষ্ট্রপুঞ্জ কি এর উত্তর দেবে? প্রতি বছরই এইসব দিবস পালিত হবে? মানে বিশ্ব ক্ষুধা, বিশ্ব দারিদ্র্য থাকবেই? রাষ্ট্রপুঞ্জ কি এর জবাব দেবে না?

বার্ষিক উৎসবের মতো এই দিবস পালনে কি রাষ্ট্রপুঞ্জ বা বিশ্ব মাতব্বরদের লজ্জা হবে না?

বিশ্ব লজ্জা বা বিশ্ব বেহায়া দিবস কবে ঘোষণা করবে রাষ্ট্রপুঞ্জ?