ঐতিহাসিক মুহূর্ত —-সুমনা আদক!
২২শে জানুয়ারি রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয়েছে, রামলালার জন্মদিন উপলক্ষে অযোধ্যার বুকে পাঁচশো বছরের ইতিহাস কে পুনর্জবিত করার দিন, সরোজুর তীরে অযোধ্যায় সেই রামলালার আবেগের তীব্রতার আঁচ পৌঁচেছে ভারতীয়ের ঘরে ঘরে। ভারতের বাইরে সিডনি, কানাডা, ব্রিটেন আমেরিকার ভারতীয়রাও ৱ্যালি করছে সপ্তাহ জুড়ে। কেউ বলছে সনাতনী কেউ মনে করেন সম্প্রীতির বাতাবরণ, তবে সরোজুর লক্ষ কোটি ঢেউ পেরিয়ে অযোধ্যায় এমন একটা দিন ফিরে আসবে অনেকেরই বোধগম্য ছিল না। অযোধ্যাকে নিয়ে আবেগ রয়েছে, রামলালার ভালোবাসা চিহ্ন রয়েছে তার জন্মভূমি জুড়ে, পুরান ছড়িয়ে রয়েছে অযোধ্যার ধাপে ধাপে ভগবান রামের জন্মকালীন স্বর্গ তুল্য অযোধ্যাক্ষয় হয়েছিল তাঁর জ্লসমাধির পরে। রাম পুত্র কুশ পুনরায় পিতার জন্মস্থানকে পুননির্মাণ করেন শেষমেষ তিনিই ভগবানের এমন মন্দির স্থাপন করেছিলেন অযোধ্যায়। তারই সমকালে প্রায় ৩০২০টি মাতা সীতার মন্দির নির্মিত হয়েছিল অযোধ্যায়। পরবর্তী সময়ে মহারাজা বিক্রমাদিত্য অযোধ্যার রামমন্দিরের রক্ষনাবেক্ষন করেন। ভারত বর্ষের পুরোনো ইতিকথায় বড়ো অংশ জুড়ে অযোধ্যার নাম থাকলেও এখানে
বিতর্ক রয়েছে , রহস্য রয়েছে।
১৫২৮ সালে বাবরের সমকালীন রামমন্দির ভেঙে সনাতনীরদের রক্তের সাথে চুন সুরকি মিশিয়ে তৈরী হলো বাবরি মসজিদের দেওয়াল। লক্ষধিক সনাতন ভারতীয় মৃত্যু মিছিলের উপত্যকায় দাঁড়িয়েও নিজেদের শেষ আস্থার মনোবল চূর্ণ তখন; তবুও ৬৫০ বছর ধরে অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই করা একটা জাতি একটা ধর্মের মারুদন্ড মজবুত রেখে নিজের ধর্মের গোমড়ানো মোচড়ানো ভেঙে যাওয়া আস্থার শেষ বিন্দু ছিল রামকে ঘিরে। হিন্দু হিতার্থে শপথ নিয়ে ২৫সে ডিসেম্বর ১৯৪৯ স্বামী পরমহংস রামচন্দ,মোহন্ত দিগ্বিজয়, গোপাল সিং বিশারি
৫০০ বছরের ভাঙাগড়ার ইতিহাসকে পুনরায় ফিরিয়ে দিতে সরোজুর জলে ধুয়ে বাবরিধাচার মূল গহবরে প্রতিষ্ঠা করলেন প্রভু শ্রীরামকে এরপরই নতুন করে প্রকট হলেন রামমূর্তি।তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এরেষ্ট হলেন রামমূর্তি স্থাপনের সেই তিন প্রতিষ্টাতা। রামলালার মূর্তি সরানোর আদেশ কে আমান্য করে নিজের ইস্তফা পত্র জমা দেন সেখানকার ডিস্টিক ম্যাজিস্ট্রেট। ১৯৬৪ সালে গঠিত বিশ্বহিন্দু পরিষদ মামলাটি সামাজিক রূপে জনসমক্ষে নিয়ে আসার পরই সেটি এলাহাবাদ আদালতে সনান্তরিত হয়। ১৯৯২ সালে কল্যাণ সিং এর আমলে মন্দির প্রকল্পের জন্য জমি আদিগ্রহণ হলে কর সেবকরা বাবরি ধাচাকে ধ্বংস করার সাথেসাথে সংকল্প নেয় রামমূর্তি স্থাপনের। ২০১৯ এর ঐতিহাসিক সাফল্য হাসি ফেরায় শোয়ে শোয়ে সনাতনী ভারতীয়র চোখে মুখে। অযোধ্যার বুকে রাম মূর্তির প্রতিষ্ঠাদিবসের দিন হয়তো ঝরে পড়বে সেই সংস্কৃতির গৌরব যেখানে একাধারে বাস করবে রাম ওপরদিকে রহিম। হ্যাঁ এটাই ইতিহাস যেখানে সত্যটা বরাবরই উঠে আসে গোড়া থেকে, আমাদের সংস্কৃতিতে রাম হলো সেই আদৰ্শ পুরুষ যিনি একাধারে যোদ্ধা, সুপুত্র, স্বামী পরম ভ্রাতা সর্বধর্ম সাথে নিয়ে সম্প্রীতির বন্ধু। কাজেই কে হিন্দু কে মুসলিম কে শিখ এখানে কোনো বিভেদ নেই সেইজন্যই হয়তো মন্দির নির্মাণে মুসলিম তহবিল থেকে চাঁদা এসেছে লক্ষের অধিক। শিখের চাদর চড়বে মন্দিরের চৌকাঠে। সনাতনীর রক্ত রাঙানো অস্তিত্ব রক্ষার লড়ায়ের জয়ে দেশ জুড়ে আজ খুশির বন্যা বইছে, রাষ্ট্রপতি সহ মন্দির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং। সপ্তাহ জুড়ে ফুলেমালায় জরিয়ে রয়েছে অযোধ্যার অলিগলি, উলু শঙ্খধ্বনিতে
আত্মত্যাগীদের শ্রদ্ধা জানিয়ে, প্রদীপের আলোয় ম্লান হল ফেলে আসা কালো ইতিহাস প্রজ্জ্বলিত হয়, রামলালার মুখ তৈরী হবে নতুন ভারতের ইতিহাস, সত্যিই গর্বেরও বটে তারই সাক্ষী থাকল গোটা বিশ্ববাসী, !!!
সুমনা আদক!