অবতক খবর,রূপম রায়,১৮ অক্টোবর: হিন্দু সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী লুপ্ত প্রায় উৎসব গার্সি জাগানো বা গাস্যি ব্রত বা উত্সবের কথা. কৃষিজীবী নমঃশূদ্র এবং অন্যান্য সম্প্রদায়ের জীবনে গাস্যি ব্রতের প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।

বহুমুখী উদ্দেশ্যে এই গাস্যি উত্সব আশ্বিন সংক্রান্তি ভোর রাতে থেকে পহেলা কার্তিকের সকাল পর্যন্ত পালিত হয় ভোর রাত্রে হাতে গড়া ১৪ প্রদীপ জ্বালান হয়।পাখাটি দিয়ে আগুন জালিয়ে গা হাত পা ছেকা তেঁতুল পুড়িয়ে ঠোঠে দেওয়া শঙ্খ বাজানো সরষের তেল গরম করে গা হাত পা তেল দিয়ে মাথা আঁচড়ানো বিভিন্ন নিয়ম-কানুন মেনে করা হয় আমার মনে হয় এটা আমাদের সমাজের দীপাবলী।

রোগ ব্যাধি খোস পাঁচরার হাত থেকে মুক্তির জন্য সকালে কাঁচা হলুদ ও নিম পাতা বাটা নিয়ে স্নান করে আসতাম বিল থেকে ঠাকুর প্রণাম করার আগে কলা কচুর ডগায় প্রদীপ থেকে বাড়ির মা বোন কাকিমা কাজল পাড়ায় রাখত আমরা চোখে কাজল সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতাম, গোরুর মঙ্গল কামনায় তাদের স্নান করিয়ে এনে পা ধুইয়ে শিঙে তেল মাখানো হত গাভী এবং বকনা গরুদের শিঙে তেল সিন্দুর দেয়া হত।

কৃষিজীবী সমাজে গোরুর অপরিহার্যতা অনস্বীকার্য।গোরুর স্বাস্থ্যের দিকে তাকিয়ে তাদের জঙ্গল এর সংগে বিশেষ ধরনের পিঠে খাওয়ানো হত যাতে তাদের রোগ ব্যাধি আক্রমণ না করে। অপরদিকে রাত্র ভরে পিঠে বানিয়ে রাখতেন মা আমরা প্রাণভরে খেতাম ,বিশেষ করে ভিজেনে পিঠে, কাটা পিঠে খেতাম, উঠানে ল্যাপা দেয়া যায়গায় থালায় তালের আঁঠি থেকে শাঁস বের করে রাখা হোত,আমরা খেতাম তালের আঁঠি কাটতে গিয়ে অনেকের আঙুলও কাটতো।

এই গাস্যিতে হিন্দু ধর্মের প্রভাব লক্ষ্য করা যায়, আমরা সারা রাত জেগে পড়াশুনা করতাম, বিশ্বাস ঐ রাত্রে পড়লে সারা বৎসর পড়া মনে থাকবে, উত্সবের প্রতিটি পর্বে লক্ষ্য করা যায় .এর সংগে লক্ষণীয় ।

এই উত্সবে বালক বালিকাদের মশা মাছি ইঁদুর বাঁদর তাড়ানো উত্সব. আগের দিন কুলো, জেরের টিন ইত্যাদি জোরে জোরে পিটানোর জন্য যোগাড় করে রেখে দিতাম।

মশা যেত কিনা জানিনা তবে আমরা কুলো পিটিয়ে অনাবিল আনন্দ লাভ করতাম গ্রামের বিভিন্ন পাড়া থেকে কুলো পেটানোর দল বের হোত। গ্রামে কারুর ঘড়ি ছিলো না বলে অনেক সময় আমরা অনেক রাত্রেও কুলো নিয়ে বেরিয়ে পড়তাম । বাজাতে বাজাতে সব বাড়ি যেতাম।।

পেটানোর তালে গাইতাম,আয়রে মশা তায়রে পায় দেব তোর দড়ি সগোল মশা খেদায় দেব অমুকের মার বাড়ি আর কওয়া যাবে না, তবে ঠাকুরমা দিদিমারা শিখিয়ে দিতেন গাইতাম সরল মনে কুলো জের আস্ত আনতাম না ।

সেই আনন্দ গেলো কোথায় ?

কবির ভাষায়-

লও হে নগর,

দেও ফিরে সে অরণ্য