অবতক খবর,২৫ জানুয়ারি: হালিশহর পৌরসভার পৌর প্রশাসক রাজু সাহানী, তার বিরুদ্ধে বারংবার অভিযোগ উঠে আসছে একটি খবরের কাগজের পাতায়।

কিছুদিন আগেই পুকুর ভরাট নিয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল যে, হালিশহরের বিভিন্ন পুকুর ভরাটের বিরুদ্ধে তিনি কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। এই সংক্রান্ত আরো অনেক কিছু লেখা হয়েছিল ওই খবরের কাগজে। ‌

লেখা বের হতেই তিনি নড়েচড়ে বসেন। এরপর কড়া পদক্ষেপ নেন পুকুর ভরাটকারীদের বিরুদ্ধে।

অন্যদিকে আজ অর্থাৎ ২৫শে জানুয়ারি, তাঁর বিরুদ্ধে ওই খবরের কাগজের পাতায় এক গুরুতর অভিযোগ উঠে এলো। হালিশহর বোলদেঘাটা সংলগ্ন অঞ্চলে তাঁর একটি রিসর্ট রয়েছে ‘হাইনেস্ট’ নামে।

ওই খবরের কাগজের পাতায় রিসোর্টের নাম উল্লেখ করে অভিযোগ তোলা হয়েছে যে, সেখানে পূর্বে একটি জাহাজ তৈরির কারখানা ছিল। বহু বছর পরিত্যক্ত থাকার পর সেখানে গড়ে উঠেছে রিসর্ট। কিন্তু রাজ্য ভূমি সংস্কার দপ্তরের কাগজে কলমে সেটি এখনও রয়েছে কারখানাই।

অভিযোগ তোলা হয়েছে, গঙ্গার পাড় বেআইনিভাবে দখল করে ওই রিসর্টে কংক্রিটের পাঁচিল তোলা হচ্ছে। শুধু তাই নয় যেখানে এই রিসোর্টটি তৈরি হয়েছে সেখানে ছিল এটি নালা যা দিয়ে হালিশহরের বেশিরভাগ অঞ্চলের নিকাশের জল গঙ্গায় ফেলা হতো। ‌ অভিযোগ রিসোর্ট বানাতে গিয়ে ওই নালার গতিপথ পর্যন্ত ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

সেখানে অভিযোগ করে আরও বলা হয়েছে যেহেতু তিনি এখন বর্তমান শাসক দলে রয়েছেন এবং শহরের প্রশাসক পদে রয়েছেন, সেই কারণে ভয়ে কেউ মুখ খুলতে চাইছেন না। ‌

এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই তৃণমূলের অন্দরেও দেখা দিয়েছে চাপা উত্তেজনা।

এই সংবাদ রাজু সাহানীর চোখে পড়তেই তিনি আজ তড়িঘড়ি প্রেস মিট করেন এবং সেখানে জানান, তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আর যে সংবাদপত্রে এই খবর প্রকাশিত হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে তিনি মামলা করবেন বলে জানান।

আজ প্রেসমিটে রাজু সাহানী বলেন,”আমি যদি বেআইনি কাজ করে থাকি, এক ইঞ্চিও জমি যদি বেআইনিভাবে নিয়ে থাকি তবে পৌরসভার ইঞ্জিনিয়ারিং টিম ও এক্সিকিউটিভ অফিসার রয়েছেন, তারা তদন্ত করে দেখুক। তাতে আমি যদি দোষী হই,তাহলে আমি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে বেআইনি নির্মাণ গুলো ভেঙে ফেলব। বিরোধী দল আমাকে বদনাম করার চেষ্টা করছে। তাতে কিছু লাভ হবে না। এই সব বিরোধীদের চক্রান্ত।এই বিষয়। নিয়ে আমি আইনের দ্বারস্থ হব।”

তবে এখন এই বিষয়টি নিয়ে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন যে, হালিশহরের প্রথম নাগরিক অর্থাৎ প্রশাসক রাজু সাহানির বিরুদ্ধে এই যে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে এর তদন্ত করবে কে? এর তদন্ত হওয়া দরকার। বেশ কিছুদিন ধরেই একের পর এক অভিযোগ রাজু সাহানির বিরুদ্ধে উঠছে কিন্তু তা সত্ত্বেও কোন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না কেন?

এদিকে বিষয়টি জানার পরেও অঞ্চলের তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্বরা মুখ খুলতে চাননি।

সামনে পৌরসভা নির্বাচন, আর এর মধ্যে যদি কেউ বেফাঁস মন্তব্য করে বসেন তাঁর বিরুদ্ধে তবে মুশকিলে পড়তে হবে, সেই ভয়ে কেউ মুখ খুলতে চাননি, এমনই দাবি করছেন বিরোধীরা।