বঙ্গীয় উপত্যকায় উত্তপ্ত উত্তেজিত বাতাস বইছে। মৃত্যু উপত্যকায় মানুষ ভীত সন্ত্রস্ত।
মানুষের প্রতি মানুষের সন্দেহ অবিশ্বাস ক্রম বর্ধমান…

হায়, মানুষ!
তমাল সাহা

মানুষ হইয়া আমি করলাম কি?
এতদিনেও মানুষ চিনলা না গো জী!
চিনবা মানুষ?
মানুষ চেনা বড়ই কঠিন!
দুইটা যন্ত্র লাগে–অণুবীক্ষণ- দূরবীন।

নন্দীগ্ৰাম-সিঙ্গুরে তুমি সরব,
ভাঙর-সন্দেশখালিতে কেন নীরব?
তাপসী মালিকের পোড়াদেহ
তুমি ক্রুদ্ধ—চোখমুখ লাল।
কামদুনির মেয়েটির ছিন্নযোনি,
দেখোনি তুমি গতকাল।

তাপসী মালিকের গান লেখো তুমি
সেখানে কামদুনি নাই!
কাটমানি নিয়ে গান বাঁধো,
তোমার মঞ্চ বাঁধা একুশে জুলাই।

জয়-পরাজয় বুঝিনা কিছুই,
সুবোধ-নির্বোধ কিনা ভাবি।
শুভ-অশুভ বোঝা বড় দায়,
জাত-বেজাত কে বড় কবি?
চারিপাশে ভিড়—
কে ব্রাত্য,কে অব্রাত্য জন
চেনা-বোঝা দুঃসাধ্য এখন।

কে নাট্যকার,কে চিত্রকর,কে কবি
এরাই তো দেশের বিদ্বজ্জন।
এদের প্রতি বিশ্বাস আস্থায়—
প্রতীক্ষায় আমরা চিরক্ষণ।

এরাই কে কখন পাল্টায় দিক—
গেরুয়া সবুজ।
আমরা সাধারণজন চেয়ে থাকি
বুঝিনা কিছুই— অবুঝ।

এদের পেটে মাথায়
সম্পূর্ণ আয়ত্ত জ্ঞান-বিদ্যা।
এরা বহিরঙ্গে মানুষের পাশে
অন্তরঙ্গে পছন্দ ভূষণ মুদ্রা।

হিজাব মাথায়
বিশালাক্ষী-দুর্গামাতা হেঁটে যায়।
ত্রিশূল হাতে
ঘনঘন জয় শ্রীরাম উচ্চারণ।
ধর্মীয় তোষণে বাতাস ভারী—
এ এক অন্য সামাজিক দূষণ।

হাওয়া স্তব্ধ, সব কথা শোনে,
শেষে ছুটে চলে যায়—
বলে, শোনো হে, কলমচি !
মানুষ চেনা বড় দায়।

বাড়ির পাশে রামপ্রসাদের ভিটে।
উনি নৌকায় বসেছেন গীতে,
মানব জীবন রইল পতিত
আবাদ করলে ফলত সোনা…
আমরা তো চতুর জ্ঞানপাপী
শুধু লাঙলের কাজ জানিনা।