রাজীব মুখার্জী :: অবতক খবর :: হাওড়া ::     আগামী বছর বিধানসভার নির্বাচন। আর সেই নির্বাচনের পূর্বে দলীয় স্তরে ব্যাপক রদবদল ঘটালেন তৃণমূল সুপ্রিমো ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। রাজের সাথে সাথে হাওড়া জেলা তৃণমূল কংগ্রেসে এলো ব্যাপক রদবদল। হাওড়া জেলা সদরের সাংগঠনিক স্তরে নবীন প্রজন্মের উপরেই আস্থা রাখলো দল। এবং প্রবীণদের মর্যাদার ভারসাম্য বজায় রাখার অংক কষলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দোপাধ্যায়।

বৃহস্পতিবার দলীয় ভার্চুয়াল বৈঠকে হাওড়া (সদর )সভাপতির পদের দায়িত্বে মন্ত্রী অরূপ রায়ের জায়গায় বসানো হল মন্ত্রী লক্ষ্মীরতন শুক্লাকে । আর মাথার উপর চেয়ারম্যান হিসাবে থাকবেন অরূপ রায়। অন্যদিকে হাওড়া সদরের কোঅর্ডিনেট হিসেবে রাখা হয়েছে জেলার আরেক মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় কে।এমনকি বনমন্ত্রী রাজিব ব্যানার্জি কে আনা হয়েছে। রাজ্য কোঅর্ডিনেট কমিটিতেও ।হাওড়া (গ্রামীন )সভাপতি পুলক রায়ের মাথার উপর বসানো হয়েছে শ্যামপুরের বিধায়ক কালীপদ মন্ডলকে। অরূপ রায় ও কালীপদ মন্ডল দুজনেই তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে দলের সঙ্গে রয়েছেন।

এই সাংগঠনিক রদবদলের প্রতিক্রিয়ায় প্রাক্তন সভাপতি অরুপ রায় বলেন নির্বাচনের আগে জেলা সভাপতির পদে বদল কিংবা রাজনৈতিক ক্ষেত্রের বাইরের কোন ব্যক্তি কে জেলা সভাপতির পদে বসানো কতটা ঠিক তা আপনারা পর্যালোচনা করুন। এই বিষয়টি আমার মাথা ঘামানোর বিষয় নয়। লক্ষ্মীরতন শুক্লার হাতে হাওড়া জেলার তৃণমূলের ব্যাটন তুলে দেওয়ার পর এমনটাই জানালেন রাজ্যে সমবায় মন্ত্রী তথা সদ্য প্রাক্তন জেলা সভাপতি অরূপ রায়। তিনি বলেন, এর আগেও আমাকে ৯৯ সালে জেলা সভাপতির পদ ছাড়তে হয়েছিল। ২০০৯ সালেও একই ঘটনা ঘটেছিল। পরে জেলা সভাপতির পদে আমি এসেছি। আর তাছাড়া সংগঠনের কেউ একই ভাবে দীর্ঘদিন থাকতে পারেনা। সে ক্ষেত্রে দলটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা সঠিক সিদ্ধান্তই। এর পাশাপাশি তিনি আরো দাবি করেন, আমাকে জেলা সভাপতির পদ থেকে সরানো হলেও চেয়ারম্যান পদে বসানো হয়েছে। যা জেলা সভাপতির ওপরে। ফলে আমি মাথার উপরে রয়েছি।

অন্যদিকে, হাওড়ার মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ জেলার সভাপতির দায়িত্ব পেয়ে আপ্লুত প্রাক্তন ক্রিকেটার কথা বর্তমানে রাজ্যের ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী লক্ষ্মীরতন শুক্লা। তিনি জানান, আমি আমার দল এবং দলীয় কর্মীদের কাছে কৃতজ্ঞ। তবে আগামী দিনে সকল কে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে চাই। আমার মাথার ওপর অরূপ স্যার রাজিব স্যার দুজনই রয়েছেন। জেলার এই দুজন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীর সঙ্গে কথাবার্তা বলেই আমি দল পরিচালনার কাজ করব। সবাইকে নিয়ে পথ চলার চেষ্টা করব।

যদিও এই পরিবর্তনকে ব্যঙ্গাত্মক হিসেবেই দেখছে হাওড়া জেলা বিজেপি। বিজেপি হাওড়া সদরের সভাপতি সুরজিৎ সাহা ইডিবি ভারতকে জানান, অরূপ রায় এবং রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় দুজনকে দূরে রেখে মধ্যপন্থা অবলম্বন করেছে তৃণমূল। লক্ষ্মীরতন শুক্লা কে সভাপতি করে দলের ভাঙন রোধ করার চেষ্টা করছে। লক্ষ্মীরতন শুক্লা সংগঠনের লোক নয় কিন্তু দল ভাঙার রক্ষা করতেই তৃণমূলের এই মরিয়া প্রচেষ্টা।
সম্প্রতি দুর্নীতি প্রশ্নে হাটে হাঁড়ি ভেঙেছিলেন হাওড়া জেলার ডোমজুড়ের বিধায়ক ও রাজ্যের বনমন্ত্রী রাজীব ব্যানার্জী। জেলা রাজনীতি তে দুজন দুই মেরুর লড়াইতে এবারে মধ্যপন্থা বেছে নেওয়া হলো ও সভাপতি পদ থেকে সমবায় মন্ত্রীকে সরিয়ে সংগঠনের বাইরের কাউকে নিয়ে আসা কে কার্যত দুর্নীতির প্রশ্নে দল তার বার্তা দিলো বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহল।