করোনা-র পর কি হবে আমাদের? এতোদিনের বিচ্ছিন্নতায় আমরা কি আর চিনতে পারবো না কাউকে!

স্মৃতিভ্রংশ
তমাল সাহা

আমার বড় ভয়।
আমি তো গৃহবন্দী এখন
করোনার ভয়ে অন্তরীণ।
আমার চোখের সামনে
প্রিয় প্রকৃতি বিলীন।

কেন ভয়?
আমি মেনে নিচ্ছি পরাজয়।
আমাকে করেছে গ্রাস রাহু-কেতু
আমি খুঁজে যাই ভবিষ্যতের সেতু।

এ তো ঠিক
প্রতিদিন ভোরে-রাতে
কবিতা হাত ধরে নিয়ে যায় ছাতে।
বলে, এখন আকাশ দেখো
দেখো সৃর্য চন্দ্র এই গ্রহ নক্ষত্র তারা।
তোমাকে আর কি সঙ্গ
দিতে পারি আমি এ ছাড়া!

স্মৃতিভ্রংশ হতেছে কি আমার!
আমি বলি,
উত্তরে নক্ষত্র কি এখনও আছে?
আলো ছড়ায়?
সে বলে, আছে তো! কি হলো তোমার?
নাহলে তো পৃথিবী উল্টোদিকে ঘুরে যায়।

আমি বলি
করোনা তো চলে যাবে,
বিচ্ছিন্নতা কি থেকে যাবে?
আমি চিনতে পারবো তোমায়?
ছুঁলে সেই স্পর্শ অনুভব করবে কি তুমি চোখের পাতায়!

এতোদিন লকডাউন–
সম্পর্কহীনতার অশুচিতা
আমাকে ভুলিয়ে দেবে কি মানবতা!

এই আকাশ অরণ্য সমুদ্র নদী—
কতো কতো দিন এদের দেখিনি
আমার সেই গভীর সম্পর্ক ছিন্ন
কি করবো আমি স্মৃতিভ্রংশ হয় যদি!

আমি তো বিচ্ছিন্ন এখন।
স্বার্থপরতা ঘিরেছে আমায়,
আমি তো মানুষ ছাড়া।
বহুদিন যোগাযোগহীন
আমি এক পথহারা।

মানুষ তোর পায়ে পড়ি।
তোর সঙ্গে করোনার পর
যদি দেখা হয় ক্ষমা করে দিস
যদি না চিনতে পারি।

এই অপরাধ অন্যায় তো আমার নয়,
তুই কি বুঝবি মানুষ, আমার বড় ভয়!
আমি পরাজিত মানসিক নিহত,
ঘটে গেছে মহামারীর মহাপ্রলয়।

তোর আর আমার সম্পর্ক
কেউ কি করতে পারে বিচ্ছিন্ন!
প্রৌঢ় বেলা চলে যায়
মানুষ তুই ছাড়া আমি বিপন্ন।