স্বাধীনতার ৭৫-তম বর্ষঃ পর্ব ৫

স্বাধীন হলে দেশের মানচিত্র ছোট হয়ে যায়
তমাল পাহা

দেশ‌ মানে ভূ-ভাগ। স্থলভূমি। আর সেই দেশ, যা নিয়ে তোমার এত ভাবনা,সেই দেশ তোমার বুকের ভেতর। তার অস্তিত্ব তোমার চেতনায়। সে তোমার সঙ্গে সঙ্গে যায় তুমি যে ভূখণ্ড বা অঞ্চল থেকে পালিয়ে যাচ্ছ অন্য ভূখণ্ডে তাতেও দেশ তোমাকে ছেড়ে যায় না। তুমি ভূখণ্ড পাল্টাতে পারো দেশ পাল্টাতে পারো না। সীমান্ত, কাঁটাতার, বর্ডার, পার্টিশান তুমি যত শব্দই আহরণ করো দেশের মানে লেখা আছে শুধু তোমার হৃদয় অভিধানে।

কাঁটাতার দিয়ে দেশ বাঁধা যায়? তুমি দেশকে ভালোবেসে বাঁচতে চাও তাই পলায়নের পথ গ্রহণ করো। বড় বড় মনীষীরা,বিদগ্ধ মানুষজন অনেক অনেকবার দেশ ছেড়ে পালিয়ে চলে গেছে কিন্তু নিজের দেশকে বুকেই ধরে রেখেছে। ‌নাট্যকার ব্রেখট পালিয়েছে, বিজ্ঞানী আইনস্টাইন পালিয়েছে। তাতে কি দেশ হৃদয় থেকে মুছে যায়? তুমি পলায়নের পথ ধরো এ তো তোমার দোষ নয়, এ অন্যায় অপরাধের দায় তোমাকে স্কন্ধে বহন করতে হয়। এ পাপ ক্ষমতালোভীর লালসার পাপ। তুমি তার শিকার।

বাবা একে কি বলে? একে বলে এক ধরনের নির্বাসন। নির্বাসনে থাকলেও দেশের কথা তোমার মনে পড়বেই, ঘনঘন ভেসে উঠবে দেশের মুখ। আরো অনুরাগ বেড়ে যাবে তোমার দেশের প্রতি,বারবার মনে হবে মায়ের কাছে ফিরে যাই। এটাই দেশপ্রেম, দেশ চেতনা।

বছরে একদিন বা দুইদিন নিয়ম করে পতাকা তুললেই দেশপ্রেম হয়ে যায় না।‌ তুমি যত জোরেই চিৎকার করে বলো, বন্দেমাতরম,জয় হিন্দ,বাদবাকি দিনগোলোতে তো তুমি মাতাকে বন্দনা করো না! দেশবিক্রির ভাবনায় মেতে থাকো, দেশের মানুষকে শোষণের কৌশল অবলম্বন করো,তার ফিকির খোঁজো।‌ কোথায় হিন্দের জয়? জয় তো ক্ষমতার,রাষ্ট্রের!

বাবা স্বাধীনতা মানে কি দেশ ছোট হয়ে যাওয়া?
হ্যাঁ,তাই তো।

ভারতবর্ষের বিশাল মানচিত্র স্বাধীনতার পর অনেক ছোট হয়ে গিয়েছে।