স্ত্রীর অদম্য লড়াই এবং আইসির তৎপরতায় মিথ্যা মামলা থেকে মুক্তি পেল অসহায় দর্জি

অবতক খবর,মালদা;সানু ইসলাম;১৭মে: নিজের কাজের বকেয়া টাকা চাইতে গিয়ে হেনস্থার শিকার হন এক দর্জি।মারধর করা হয় বলে অভিযোগ উঠে। থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয় ওই দর্জির পক্ষ থেকে। অন্যদিকে যার বিরুদ্ধে টাকা না দেওয়া এবং মারধরের অভিযোগ ওঠে সেও অভিযোগ দায়ের করে ওই দর্জির নামে। আর সেই অভিযোগের ভিত্তিতে দর্জিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এদিকে দর্জির পরিবারে তিন সন্তান। দিন আনে দিন খাওয়া অভাবের পরিবার।স্বামীর গ্রেফতারিতে ন্যায্য বিচারের দাবিতে আইসির দ্বারস্থ হয় অসহায় স্ত্রী। তারপরেই আইসি সরজমিনের খতিয়ে দেখেন মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছিল ওই ব্যক্তিকে। অবশেষে জামিনে ছাড়া পেলেন ওই দর্জি। আইসির ভূমিকায় ধন্যবাদ জানিয়েছে পরিবার। প্রশংসা করেছে এলাকারবাসীও। মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর থানার ঘটনা। হরিশ্চন্দ্রপুর সদর এলাকার বাসিন্দা শিব নারায়ন কর্মকার (৫০)।

দিনের বেলা ভ্যান রিক্সা চালান।সন্ধ্যার পর জামা কাপড় সেলাইয়ের কাজ করেন। কিছু দিন আগে শেখ মতিউর নামে একজনের কাছে তিনি জামা কাপড় সেলাইয়ের কাজ করে ছিলেন। সেই কাজের জন্য ১৫০০ টাকা পেতেন।কিন্তু টাকা চাইতে গেলে টাকা দিতে অস্বীকার করে মতিউর। যা নিয়ে বচসা বাধে এবং ধাক্কাধাক্কি হয়। শিবনারায়ণ কর্মকার মতিউরের নামে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পাল্টা মতিউর ও লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।সেই অভিযোগের ৩০৮ এবং ৩২৬ ধারায় মামলা রুজু হয় শিবনারায়ণ কর্মকারের বিরুদ্ধে।১২ তারিখ সেই অভিযোগ দায়ের হয়।

উল্লেখ্য সেদিন ছুটিতে ছিলেন আইসি দেওদূত গজমের। এদিকে এই অভিযোগের ভিত্তিতে ১৫ তারিখ গ্রেফতার করা হয় শিবনারায়ণ কর্মকারকে। স্বামীর গ্রেফতারির পর ন্যায় বিচারের দাবিতে আইসির দ্বারস্থ হন স্ত্রী।তারপরে সরজমিনে সমস্ত ঘটনা খতিয়ে দেখেন আইসি। বুঝতে পারেন মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে। শিব নারায়ন কর্মকারের বাড়িতে গিয়ে দেখতে পান তাদের প্রচন্ড দুরাবস্থা। জরাজীর্ণ টিনের বাড়ি।বাড়িতে নেই বিদ্যুৎ সংযোগ। তারপর আইসির তৎপরতায় গ্রেফতারির একদিনের মধ্যেই জামিন পেলেন শিবনারায়ণ বাবু। আইসির ভূমিকায় প্রশংসায় পঞ্চমুখ সকলে। পুলিশকে এভাবে সমস্ত ঘটনা খতিয়ে দেখা উচিত মত এলাকাবাসীর। ধন্যবাদ জানিয়েছেন ওই দর্জির স্ত্রী শকুন্তলা কর্মকার।

শিব নারায়ণ কর্মকারের স্ত্রী শকুন্তলা কর্মকার বলেন, আমার স্বামী টাকা পেত কিন্তু টাকা দেয়নি। উল্টে মিথ্যা মামলা করেছিল। সেই মামলার ভিত্তিতে গ্রেফতার হয়। আমি হাল ছাড়িনি। ন্যায় বিচারের জন্য আইসির কাছে গেছিলাম। আজ আমার স্বামী জামিনে ছাড়া পেল। আইসিকে ধন্যবাদ।

প্রসঙ্গত বিভিন্ন সময় দেখা যায় অনেকে মিথ্যা মামলায় ফেঁসে যায়। তাই এক্ষেত্রে মামলা রুজু করার আগে পুলিশের বিচার করা উচিত। কি ভাবে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে তদন্তকারী অফিসার খুনের চেষ্টার মামলা রুজু করলো সেই নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। তবে আইসির তৎপরতায় সাধুবাদ জানিয়েছে সকলে।