অবতক খবর, মালদা: স্কুলের সরস্বতী পুজোয় কোনও ব্রাহ্মণ নয়, পুরুষও নয়, আদিবাসী ঘরের মেয়ে পুজো করে অনন্য নজির গড়লো মালদার দাল্লা চন্দ্রমোহন হাই স্কুল। জাতি বা ধর্মের ঊর্ধ্বে গিয়ে এবং লিঙ্গ-বৈষম্য ভুলে এরকম সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। যা প্রচার হতেই আদিবাসী অধ্যুষিত হবিবপুর ব্লকের দাল্লা গ্রাম জুড়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।

এদিন বাগদেবীর পুজো করল আদিবাসী ছাত্রী রোহিলা হেমব্রম। তার আগে পূজোর সমস্ত শিক্ষার প্রশিক্ষণ নিয়েছে সে। আর বাগদেবীর আরাধনায় ওই ছাত্রীকে সবরকম ভাবে সহযোগিতা করছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক জয়দেব লাহিড়ী থেকে শুরু করে অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকারা। বিশেষ করে পুজোর নিয়মাবলির ক্ষেত্রে ওই ছাত্রীকে সম্পূর্ণভাবে সহযোগিতা করছেন আরেক অ-ব্রাহ্মণ শিক্ষক বিনয় বিশ্বাস। ইতিমধ্যে সরস্বতী পূজার একটি বই ওই ছাত্রীর হাতে তুলে দেওয়া হয়।

দাল্লা চন্দ্রমোহন হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক জয়দেব লাহিড়ী বলেন, ‘‌আমি নিজে একজন ব্রাহ্মণ। কিন্তু জাত-পাতের ঊর্ধ্বে উঠে সরস্বতী দেবী বন্দনা করা হোক সব জায়গায়। এরকম চিন্তা ভাবনা নেওয়া হয়েছিল। তার জন্যই এই স্কুলের আদিবাসী ছাত্রীকে দিয়ে এবারের সরস্বতী পূজা করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। লিঙ্গ-বৈষম্য ভুলে অ-ব্রাহ্মণ ওই ছাত্রীকে দিয়ে এবারে সরস্বতী পূজা করানো হল।’‌এদিন শিক্ষকদের শেখানে মন্ত্রপাঠ করেই প্রথা মেনে পুজো করে একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রী রোহিলা। পুজো শেষে বেশ আনন্দিত দেখালো তাকে। বলে, ‘‌প্রধান শিক্ষক যে পুজোর দায়িত্ব আমায় দিয়েছে, তা সঠিকভাবে আমি পালন করতে পেরেছি। তিনি যে উদ্যোগ নিয়েছেন, আমার মতো আদিবাসী মেয়েকে দিয়ে পুজো করিয়েছেন, আমি কৃতজ্ঞ তাঁর প্রতি।’‌