অবতক খবর,২৩ ফেব্রুয়ারি :: চাঁন্দুয়া অঞ্চলে সুদীর্ঘ বছর কাল ধরে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় চলে আসছে। হঠাৎ করে নাকি সেই স্কুলে নতুন করে সাইন বোর্ড বসানো হয়েছে। সেখানে লেখা রয়েছে জামিয়াত শ্রী গান্ধী প্রাইমারি স্কুল, এমন অভিযোগ উঠে এলেও, এর কোনো বাস্তবতা নেই। অবতক-এর অনুসন্ধানে দেখা গেছে এটি ভুল তথ্য।

পূর্ব থেকেই স্কুলটির নামকরণ ছিল জামিয়াত শ্রী গান্ধী প্রাইমারি স্কুল। বোর্ডটি দীর্ঘ পুরানো হয়ে যাবার কারণে জামিয়াত শব্দটি হয়তো বা উঠে যায়। সরকারী ভাবে স্কুলটি জামিয়াত শ্রী গান্ধী প্রাইমারি স্কুল নামে অনুমোদিত ও স্বীকৃত।

স্কুলের উন্নতিতে নতুন করে অর্থ মঞ্জুর করা হয়েছে। ফলে বোর্ডটিও নতুন করে লাগানো হয়েছে।তাই বেশি করে লোকচক্ষুর নজরে এসেছে। কোনো স্বার্থান্বেষী চক্র রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে এ বিষয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে।

ভারতবর্ষের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এখন বড়ই অস্থির। ধর্মীয় বিভাজনের রাজনীতি এবং উস্কানি ব্যাপকভাবে চলছে। কেন্দ্রীয় সরকার যখন সরাসরি ধর্মীয় বিভাজনের কথা বলছেন, হিন্দুস্তান গড়ে তোলার কথা বলছেন, হিন্দুত্বের অহংকার গড়ে তোলার কথা বলছেন তখন কি কারণে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে এটি ভাবনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি কোন ধর্মীয় উস্কানি কিনা এটি মানুষের ভাবনার বিষয় হয়ে উঠেছে।

ভোট সর্বস্ব রাজনীতির এই দেশ, সেখানে ধর্ম একটা বিশেষ ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে। আমরা স্বাধীনতার পরবর্তীকাল থেকেই তা দেখে আসছি। এখানেও সেই স্বার্থেই এমন প্রচার করা হচ্ছে বলে রাজনৈতিক মহলের অনুমান তো বটেই, অঞ্চলের সুধীজনেরাও তাই মনে করেন।

তবে অবশ্য এই জামিয়াত শব্দটির পেছনে একটা ইতিহাস আছে। জামিয়াত মিঞা নাম এক সুধী ব্যক্তি ছিলেন কাঁচরাপাড়ায়। তিনি কাঁচরাপাড়া পৌরসভার কমিশনারও হয়েছিলেন। বর্তমান লেনিন সরণির যে বিল্ডিংয়ে এখন অর্চনা ফ্যাশান দোকানটি রয়েছে,ঐ বাড়ির মালিক ছিলেন তিনি।

বাড়িটি ছিল দেখবার মতো। চকমিলান বাড়ি, মুসলিম ঘরানার। তিনি মুসলিম লীগের নেতা হলেও কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁর অত্যন্ত সদ্ভাব ছিল। তিনি বহু জমিজমার মালিক ছিলেন। স্কুল প্রতিষ্ঠার জন্য ঐ জমি তিনি প্রদান করেছিলেন। ঐ সময়ে অঞ্চলে গান্ধীজির ব্যাপক প্রভাব ছিল। সেই কারণে গান্ধীজির নামে স্কুলটির নামকরণেরও উদ্যোগ তিনিই গ্রহণ করেছিলেন।এটাই ইতিহাস।

বর্তমান ভারতবর্ষে একটি কেন্দ্রীয় পার্টি ও একটি রাজ্য পার্টি ক্ষমতায়নের জন্য এমন উস্কানিমূলক কাজ করে চলেছে।ধর্মীয় বিষ আমাদের নিয়ে যাবে আর কত দূর?