অবতক খবর, সংবাদদাতা, মুর্শিদাবাদ, লালবাগ :: মুর্শিদাবাদ পৌরসভা এলাকার সিংঘী উচ্চ বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ বিল্ডিং ভেঙে নতুন ভবন করা নিয়ে চলছে টালবাহানা। আর এই সংবাদ এক স্থানীয় পত্রিকা প্রকাশ করায় নড়েচড়ে বসে পৌরসভা ও স্কুল কর্তৃপক্ষ। পৌর প্রশাসক ও তৃণমূল নেতা বিপ্লব চক্রবর্তী জানান যে স্কুল বিল্ডিং এর প্ল্যান পাস করা হয়নি ও পৌরসভা এটাতে বাধা দিচ্ছে এমন কোনো ব্যাপার নেই। এই খবরটি সম্পূর্ণ ভুল ছাপিয়েছে স্থানীয় একটি পত্রিকা। তিনি ভুল খবর করে বিভ্রান্তি ছড়ানোর জন্য স্থানীয় পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চলেছেন বলে জানান।

উল্লেখ্য যে গত অক্টোবর 2019  এই সিংঘী স্কুলের দ্রুত জরাজীর্ণ বিল্ডিংটি ভেঙে দেয় স্কুল কর্তৃপক্ষ। নতুন বিল্ডিং করার জন্য সর্বশিক্ষা মিশন ও শিক্ষা দপ্তর থেকে 19,61081  টাকাএবং 15 লক্ষ 55 হাজার টাকা অর্থ বরাদ্দ হয়। টাকা বরাদ্দ হতেই তারা বিল্ডিংয়ের নির্মাণের জন্য পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে প্ল্যান জমা দেন কিন্তু তারা প্ল্যান জমা দিলেও জমির কোন দলিল বা কাগজপত্র জমা দেননি।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জীব ঘোষ এর কাছে পৌরসভা পক্ষ থেকে জমির কাগজপত্র চাইলে তিনি পরিষ্কার জানান যে তাদের কাছে কোনো কাগজপত্র নেই। পরে রেকর্ড ঘেঁটে জানা যায় যে জমিটি এখনো মুর্শিদাবাদ পৌরসভারই।

এমন অবস্থায় স্কুল বিল্ডিং নির্মাণে যাতে কোনরকম দেরি না হয় তাই পৌরসভার পক্ষেই এই নির্মাণে প্লান সংশোধন করে জমা দেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জীব ঘোষ । 8.7 20 তে প্ল্যান পাস করে দেয় পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। তারা প্লান এর কপি তুলে দেয় স্কুল কর্তৃপক্ষের হাতে।

তবে স্থানীয় পত্রিকায় খবর নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ বা পৌর প্রশাসক এর কাছে যোগাযোগ না করেই খবরটি ছাপিয়ে দেয় বলে অভিযোগ প্রধান শিক্ষক সঞ্জীব ঘোষ ও প্রশাসক বিপ্লব চক্রবর্তীর। তারা দুজনেই যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে একথা জানান। তারা দুজনেই দাবি করেন যে স্কুল বিল্ডিং নির্মাণ নিয়ে পৌরসভা বা স্কুল কর্তৃপক্ষের মধ্যে কোনো সংঘাত বা বিবাদ নেই।

তবে প্রশ্ন প্রায় একশো ষাট বছর পুরনো ঐতিহ্যবাহী এ স্কুলের আজ পর্যন্ত তাদের জমি জায়গা নিয়ে কোনো তথ্যই রাখে নি কেন? এতদিন যারা যারা স্কুলে দায়িত্বে ছিলেন তারা বা যে পরিচালনা কমিটিগুলি এতদিন ছিল তারাও স্কুলের সম্পত্তি নিয়ে কোন মাথা ঘামাননি কেন? অর্থাৎ গোড়াতেই গলদ রয়েগেছে। সেটা আজ পর্যন্ত ঠিক করতে উদ্যোগ নেয়নি কেউই।

তবে যাই হোক, বিল্ডিং ভাঙ্গার পর এই সমস্যা তৈরি হতেই এই সমস্ত তথ্য উঠে আসে। যদিও পৌরসভা, স্কুল বিল্ডিং নির্মাণ কাজে যাতে কোনো রকম বাধা না হয় বা আটকে না যায় তাই স্কুল বিল্ডিং এর প্ল্যান পাস করে স্কুল কর্তৃপক্ষ হাতে তুলে দিয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন স্কুল জমিটি পৌর কর্তৃপক্ষের ,তাই আইনত বিল্ডিং নির্মাণ করা বা ভেঙে ফেলার দায়িত্ব পৌরসভার আছে। যে টাকা বরাদ্দ হয়েছে সে টাকাও আইনত পৌরসভার খরচ করা অধিকারী কিন্তু তা না করে এই বরাদ্দ টাকা নিয়ে কর্তৃপক্ষ খেয়ালখুশিমতো নির্মাণের অন্য কোন সংস্থাকে বরাত দিচ্ছে কি করে?

অন্যদিকে পৌর প্রশাসক জানান জমির মালিক পৌরসভা হলেও আমরা স্কুলকে জমি হস্তান্তর করার জন্য তৈরি। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষ DI মারফৎ জমি হস্তান্তরের আবেদন না করলে এটা করা যাচ্ছে না। তিনি আরো বলেন স্কুলটি ঐতিহাসিক। আমি নিজেও এই স্কুলের ছাত্র তাই আমারও ইচ্ছে স্কুল নিয়ে কোনোরকম যাতে সমস্যা সৃষ্টি না হয়। তবে কেউ কেউ ভুল খবর ছড়িয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছেন ও স্কুলের ঐতিহ্যকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।