এ বছর ভারতবর্ষে মে দিবস পালনের শতবর্ষপূর্তি। ১৯২৩ সালে শ্রমিক নেতা সিঙ্গারাভেলু চেট্টিয়ার লেবার কিষান পার্টি গঠন করে চেন্নাই সমুদ্র সৈকতে প্রথম মে দিবসের পতাকা উত্তোলন করেছিলেন। সে এক ইতিহাস। রক্তবর্ণ লাঞ্ছিত পতাকা না পেয়ে তার কন্যার লাল শাড়ি ছিঁড়ে তাকে পতাকার রূপ দিয়ে উত্তোলন করেছিলেন।

আজ কেন যেন মনে পড়ে গেল সমরেশ বসুকে এবং ওই কিশোরী মেয়েটিকে…

সাহিত্যিক ও একটি মেয়ে
তমাল সাহা

ভারতবর্ষ! তুমি কত ধৈর্য ধরো?
আজ রাতে কেন যেন তোমাদের কথা মনে পড়ে যায়!
ভারতবর্ষে আমাদের না জানিয়ে মে দিবস একশো বছর হেঁটে যায়।
আহা! প্রথম রক্ত পতাকা উঠেছিল সুনীল আকাশ ও সমুদ্র সাক্ষী রেখে
সূর্য এসে আলো ফেলেছিল তোমার ডানায়।

একটি মেয়ের লাল শাড়ি এভাবে পতাকা হয়ে উড়ছিল, সে এক দুর্দান্ত সকাল। মেয়েটির মুখে হাসি হয়ে ঝরে পড়ছিল।
তার শাড়ি হয়ে গেছে দুর্জয় নিশান
সেই পতাকা গাইছে শৃঙ্খল মোচনের জয়গান!

তুমি কি এখনো ওয়েভারলি জুটমিলে ডিচিং মেশিনের পাশে দাঁড়িয়ে আছো?
লিখছো জগদ্দল-এ বদলি ভাগওয়ালার উপাখ্যান
বিটি রোডের ধারে কামগার মানুষের যাপিত কথা
শিকল ছেঁড়া হাতের খোঁজে ছিলে কতকাল
সেসব কাহিনী অকপটে জানিয়েছ
কত রাত কেটে গেল পেয়েছো কি এখনও তার দেখা?

তোমার প্রিয় চটকলেরা আজ বন্ধ হয়ে যায়
জংধরা তালা ঝোলে মিলের দরজায়।
এই তো নৈহাটি জুট মিলের ভেতরে একটি শ্রমিক মরে পড়ে আছে, অসহায় বাতাসের হাহুতাশ
রুটি নেই রুজি নেই শ্রমিক মহল্লা ফেলে দীর্ঘশ্বাস!

মে দিবস আসে, মে দিন আসে না।
হে মার্কেট জেগে আছে, ডেকে যায়
আট ঘণ্টা কোথায়, এখন কর্পোরেট পারে তো তোকে চব্বিশ ঘন্টাই শুষে খায়
হে মানুষ! তুই কোথায়?