বিশেষ প্রতিবেদন

অবতক খবর,২৪ এপ্রিল: রাত্রি চলে আসে। আমি হেমন্তের অরণ্য দেখি। শীত বা বসন্ত ঋতু কোন দাগ ফেলে না আমার চিন্তনে। গোধূলি আলোয় পাতার মর্মরধ্বনি অথবা পাতা ঝরার দৃশ্যকে মান্যতার প্রাধান্য দেয় আমার ভাবনা। আমার মননে তখন ফেলে আসা স্মৃতির খসড়া সশরীরে দেখতে পাই।

আমার ছোট্ট বৈঠকখানা ঘর। কতদিন আগের লেখারা আমার ও আরো অনেকে সরগরম হয়ে উঠেছিল। এই ঘর কবেকার কতবার কলরব তুলেছিল মনে পড়ে না! ‘বহুবার’ এই শব্দটি উচ্চারিত হল এখন। কত কন্ঠ কত চিহ্নিত মুখ অনুল্লেখে লেখা থাকুক বুকের বারান্দায়।

একটি ছোট্ট কাব্য পুস্তিকা উন্মোচন হলো এই কৃষ্ণপক্ষ কালে। অর্ণব বলেছিল, সেই সব দিন মনে পড়ে তোমার? আর বলেছিল তোমার এখানে সেইসব পাণ্ডুরময় দিনগুলিতে কবিতা, গল্পপাঠ, নিশ্ঢিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট সামাজিক পরিবেশ নিয়ে আলোচনা আড্ডা এবং…
আমি বলি, এবং কি? অর্ণব বলে,সেই মহার্ঘ খাদ্য দ্রব্যাদি! এসো না নতুন করে শুরু করি,২৮ বছর পার হয়ে যায় এমনই তো হবে!

কেউ কথা রাখেনি। কিন্তু কথা তো রাখা যায়। মনে হলো কবিতাকে বলি,সে বলে এর চেয়ে ভাল আর কি হতে পারে এই অপরাহ্ন বেলায়। যখন সূর্যাস্তের সময় হয়ে এলো,সময়ের সাক্ষী থাকুক তোমার মানুষজন।

আজ ২১ এপ্রিল। শঙ্খ ঘোষের প্রয়াণ দিবস। কাল বুলডোজারের মুখোমুখি লড়াকু মানুষজন দিল্লির জাহাঙ্গীরনগরে। রুখে দিয়েছে ঝুপড়ি বস্তি উচ্ছেদ। মানুষই পারে, এইসব চিন্তন মনন নিয়ে সময়ের পাণ্ডুলিপি ‘অন্তর্দাহ’ সশরীরে প্রদর্শিত হলো আজ। আয়োজক সম্প্রীতি মনন প্রকাশনী। উন্মোচন করলেন সম্প্রীতি মনন পত্রিকা সম্পাদক দীপক মিত্র। তার আগে প্রদীপ প্রজ্বলন হলো। প্রজ্বালক হিসেবে হাত বাড়ালো আমারই ভালোবাসার প্রিয়জনেরা‌।কাছের মানুষ প্রত্যেকেই এভাবে দীপক হয়ে যায়।
হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ দীপকের প্রতীক্ষায় আছি আমি।

 

যোগসূত্রের কাজ করল অর্ণব, অর্ণব চক্রবর্তী। অন্তর্দাহ-এর বআক্ষরিক নির্মাণ নিয়ে আলোচনা, পর্যালোচনা করলেন দীপক মিত্র, আবির মজুমদার, দেবাশিস রায়, সুকান্ত চট্টোপাধ্যায়, রণজয় মালাকার, রাণা সেনগুপ্ত ।

উপস্থিত ছিল অনেক কাছের মানুষ। আসলে বর্ণমালা সান্নিধ্য গড়ে তোলে। পুরাতনকে কাছে এনে দেয়, নতুন প্রজন্মের সাহচর্য স্পর্শ পায়। ঘরোয়া আড্ডায় হাজির ছিল আমার প্রিয় পরিবার-পরিজনও।

সেই মহার্ঘ খাদ্যসামগ্রীর কথা মনে পড়ল। আজ আমরা সম্মিলিত আড্ডায় খেলাম হাতেভাজা মুড়ি,বাদাম,চানাচুর,মুখরুচি মশলা মিশ্রিত সেই মহার্ঘ উপাদেয়,সঙ্গে ক্যাপসিকামের চপ। কয়েকটি প্লেটে রাখা ছিল পেঁয়াজের টুকরো, কাঁচালঙ্কা। আর শিকার চা।

আজ একটি বৃত্ত রচনা হলো। জ্যামিতিক সজ্জা নিয়ে সামাজিক বৃত্তে উত্তরণ।
লেখা ও পরিজন নিয়ে গেরস্থালি জীবন‌ আজ অন্যতর মাত্রা পেল।
এও এক উত্তরণ।
আর এসব দৃশ্যপট,কণ্ঠস্বর ধরে রাখল সেই ক্ষুদে সাংবাদিক মানে রঞ্জন ভরদ্বাজ।

জানালার গ্রিলের ফাঁক দিয়ে দেখি মেঘলা আকাশে একটি বড় চাঁদ জ্বলছে। সেও কি এতক্ষণ তাকিয়েছিল আমার বেঠকি ঘরের দিকে?