অবতক খবর,১৭ মার্চ,নদীয়া:- শান্তিপুরের দৃষ্টি নন্দন নাড়ু গোপালের বর্ণনা প্রসঙ্গে বলা যায় ফটক পাড়ার গোপাল এবছর পদার্পণ করলো ছয় বছরে , সাধারণ ভাবে গোপালের উচ্চতা ১৩ ফুট হলেও মাথায় মুকুট দিয়ে এর উচ্চতা সতেরো থেকে উনিশ ফুট । তাৎপর্য পূর্ণ বিষয় হলো এই গোপাল টি তৈরি করেন এই এলাকারই বাসিন্দা সৌরভ বঙ্গ । যদিও এই এলাকার প্রত্যেকেই অর্থাৎ ছোটো থেকে বড়ো সবাই তাকে এই কাজে সহায়তা করেন বলেই এলাকা সুত্রে জানা যাচ্ছে । চাঁদুনি পাড়ার গোপালও প্রায় একই সাথে উচ্চতার নিরিখে পাল্লা দিচ্ছে । এই বৃহৎ আকৃতির গোপালের আরাধনা প্রায় ৩৭ বছর । এমনটাই জানা যাচ্ছে এলাকা সূত্রে ।
আবার ৪৬ বছর ধরে শান্তিপুর দোল উৎসবে গোপালের আরাধনা করছেন কুটির পাড়া ইয়াং স্টাফের কর্মকর্তারা । যদিও ১৯৯৭ সাল থেকে তাদের এই বৃহৎ গোপালের আরাধনা বলেই জানালেন এই এলাকা থেকে সঞ্জয় প্রামাণিক ।

অন্যদিকে শান্তিপুর হাট খোলা পাড়ায় ত্রিকোণ পার্কের গোপাল পুজোর আরাধনা প্রায় ৭৫ বছর ধরে । এই ঠাকুরের উচ্চতা প্রায় নয় থেকে দশ ফুট । এক সময় এই গোপালের আরাধনা অন্নপূর্ণা দেবীর মাঠে হলেও বর্তমানে ত্রিকোণ পার্কের মন্দিরে অত্যন্ত নিষ্ঠা ও আড়ম্বরের সাথে এই ঠাকুরের আরাধনা করা হয় । এই পুজোর অন্যতম বিশেষত্ব হলো পুজোর দিন সন্ধ্যা বেলায় যারা গোপাল দর্শন করতে যান তাদেরকে লুচি , আলুরদম ও পরমান্ন ঠাকুরের প্রসাদ হিসাবে দেওয়া হয় — এমনটাই জানালেন এই পুজো কমিটি থেকে তাপস মিত্র ।

অন্যদিকে চতুর্থ বর্ষে পদার্পণ করলো শান্তিপুর চৌগাছা পাড়া অঞ্চলের তারামা মন্দির প্রাঙ্গণের গোপাল । তারামায়ের মাঠে গোপালের আরাধনা শান্তিপুরে বৈষ্ণব ও সাক্তের একটি চরম নিদর্শন হিসাবে বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য । এই ঠাকুরের উচ্চতা প্রায় নয় ফুট এবং মাথার মুকুট সহ বারো ফুট ।

অপরদিকে শান্তিপুর পাগলা গোস্বামী পাড়ার নিউব্রর্ন ক্লাবের গোপাল আরাধনার বয়স প্রায় কুড়ি বছর । এই গোপালের উচ্চতা প্রায় দশ থেকে বারো ফুটের কাছাকাছি । তবে এলাকা সুত্রে জানা গেলো এই পুজোর অন্যতম সদস্য তন্ময় গোস্বামী মারা যাবার কারণে এবছর অনাড়ম্বর ভাবেই অনুষ্ঠিত হবে এই গোপালের পুজো ।

শান্তিপুর পঞ্চানন তলা এলাকায় ইয়াং স্টাফের নেতৃত্বে প্রায় ১৯৭৯ সাল থেকে গোপালের আরাধনা হলেও ২০১১ সাল থেকে প্রায় ১১ থেকে ১২ ফুট আকৃতির ও মুকুট সমেত প্রায় ১৪ ফুট বিশিষ্ট গোপাল করা হচ্ছে । গোপাল টি তৈরি করেন শিল্পী সঞ্জয় পাল — এমনটাই জানালেন এই পুজো কমিটি থেকে তথাগত দত্ত ।
অপরদিকে তরফদার পাড়ার লিডার্স ক্লাবের গোপাল আরাধনার বয়স প্রায় ৩০ বছর । কিন্তু ২০০৭ সাল থেকে তাদের ক্লাবে বৃহৎ আকৃতির গোপাল তৈরি হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন ক্লাবের কর্মকর্তারা । তবে এই বছর গোপালের উচ্চতা অন্যান্য বছরের ন্যায় বেশ কিছুটা ছোটো হয়েছে ।

নারু গোপালের পর থাবড়া গোপালের কথা বলতে গেলেই সর্ব প্রাচীন গোপাল হিসাবে শান্তিপুর পুঁটো পুঁটি তলার থাবড়া গোপাল বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য । চোগাছা পাড়ার বড়ো গোপাল আরাধনার আগে থেকে এই গোপালের আরাধনা করা হয় । প্রায় ১২৫ বছর ধরে এই গোপালের আরাধনা করে চলেছেন শিল্পী প্রদীপ পালের পূর্ব পুরুষেরা — এমনটাই জানাচ্ছেন মৃৎ শিল্পী প্রদীপ পাল ।

অপর দিকে কাঁসারি পাড়া অঞ্চলের থাবড়া গোপালের আরাধনা চলছে প্রায় ৫৫ থেকে ৫৭ বছর ধরে । সুউচ্চ এই গোপাল টি কাঁসারি পাড়ার পুকুর পাড় অঞ্চলের গোপাল হিসাবে পরিচিত । জানা যায় একসময় এই অঞ্চলের রাধা কৃষ্ণ পূজা কমিটির সাথে মনোমালিন্যের জেরে এই পুজোর সূচনা হয়েছিল — এমনটাই জানা যাচ্ছে এলাকা সূত্রে ।