কোভিড-করোনায় আমার মৃত্যু না হলেও শব্দাতঙ্কে- সাউন্ডফোবিয়ায় আমার মৃত্যু নিশ্চিত, তার আগাম ভাষ্য

শব্দাতঙ্ক
তমাল সাহা

কোনো শব্দের শেষে ‘শন-‘শব্দটি শুনলেই
আমি ভয়ে কুঁকড়ে যাই।
শন-শব্দটি আতঙ্ক তৈরি করতে করতে
শেষ পর্যন্ত সন্ত্রাস ছড়ায় আমার মনে।

বাবা আমাকে কাউন্সেলিং করিয়েছিলেন।
ডাক্তারবাবু অনেক চেষ্টা করেছিলেন।
আমার কম রোজগেরে বাবা
অনেক টাকা খরচ করেছিলেন
আমার রোগ নিরাময়ের জন্যে। ‌
কিন্তু সফল হতে পারেননি।
আমার বাবা মারা গিয়েছেন।

ট্রানস্লেশন শব্দটি
আসলে আমার আতঙ্কের উৎস। ‌
পড়াশোনায় কোনদিনই আমার বিন্দুমাত্র অ্যাটেনশন ছিলনা।
আমি বরাবরই ফেলটুস ছেলে।
আমার বাবা কিন্তু মাস্টার ছিলেন।

পরে বড় হয়ে অ্যাসোসিয়েশন করলেও আমি বিষণ্ণ হয়ে পড়ি। ‌
অ্যাসোসিয়েশন ক্রমশ ভাঙতে ভাঙতে টুকরো হয়ে যায়।
কোনো শব্দকে এতো টুকরো হতে আমি কখনো দেখিনি।

পরে বড় বড় হয়ে
হিটলারের সাহচর্যে আসি আমি।
কোনদিনই কোনো কাজে আমার
তেমন কোনো কনসেনট্রেশন ছিল না।

হিটলারের কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের কথা শুনে আমি আঁতকে উঠি। ‌
আমি আউৎশভিচ-এর কাহিনী শুনে ভয় পেয়ে গুটিসুটি মেরে বসে পড়ি।
সত্যি বলতে কি
গ্যাস চেম্বারে নিধন ও হলোকাস্টের কাহিনী শুনে আমার হিসু হয়ে গিয়েছিল।

শন-কে আমি ছাড়তে চাইলে কি হবে
জীবনে এই বিষণ্ণ বেলায় এসেও শন-শব্দটি আমাকে জাপ্টে ধরে। ‌

ডিটেনশন ক্যাম্পের কথা শেষ না হতেই আইসোলেশনের গল্প শুরু হয়ে যায়।
আমাকে শেষ পর্যন্ত ঘরবন্দি করে কোয়ারেন্টাইজেশনে রেখে দিয়েছে রাষ্ট্র।

এই রাষ্ট্র শেষ পর্যন্ত আমার জন্য একটা ভালো কাজ করলেও
আমি হয়তো শেষ পর্যন্ত উন্মাদ হয়ে যাবো।