রাষ্ট্র ভেজে না
তমাল সাহা

আমি যখন আগে বলেছিলাম তুমি শোনোনি এবং হলফ করে বলতে পারি এখনো গুরুত্ব দিচ্ছ না
গুরুত্ব না দেওয়াটা আমাদের অভ্যেসে দাঁড়িয়ে গেছে।

এখন নিজের চোখে দেখেও বিশ্বাস করতে পারছ না। মধ্যরাতেই সব ঘটনা ঘটে। দেশ স্বাধীন হয়েছিল মধ্যরাতে। আমারও জন্ম হয়েছিল প্রগাঢ় মধ্যরাতে শীতের অন্ধকারে।

কাজ করবার ইচ্ছে থাকলে সময় কোন বিষয় হতে পারে না। করুণাময়ী অপারেশন হতে সময় নিয়েছে মাত্র পনেরো মিনিট। দীর্ঘদিনের অবস্থানে ক্লান্ত ,অনশনে অবসন্ন প্রজন্ম, তাদের হাহুতাশ আর্তনাদ এসবকে প্রশ্রয় দিলে রাষ্ট্র চালানো যায় না।
পুলিশকে মনে করতে নেই তার নিজের বউ বালবাচ্চা আছে। এই রাস্তার মায়াবী অন্ধকারে প্রতিবাদী আন্দোলনে তাদের কোনো নিকট আত্মীয় বসে নেই।

যুবক থেকে টেনে হিঁচড়ে তুলে নিয়ে যেতে চাইলে অসহায় ভাবে তাকে টেনে রাখতে চায় তরুণী মেয়েটি।
চোখের জলে রাস্তা দিয়ে যায়,রাষ্ট্র ভেজে না।

যুবকটি শুয়ে পড়ে পুলিশের গাড়ির চাকার নিচে। সব স্তব্ধ করে দিতে চায় রাষ্ট্রীয় চক্রের ঘূর্ণন।
মৃত্যুর কথা ভুলে গেছে সে। সাহস এভারেস্টের উচ্চতা ছুঁয়ে আরো উঁচুতে উঠে যায়। মানবিক দেহগুলিকে পুলিশের লোমশ হাত ছুড়ে তুলে দেয় প্রিজন ভ্যানের ভেতর। পুলিশ লিঙ্গের প্রকারভেদ ব্যাকরণ পড়েনি কখনো। রাতে কোন নারীকে গ্রেফতার করা যায় না, থানা গারদে নিয়ে যাওয়া যায় না গাঙ্গেয় উপত্যকার পুলিশ কোডে এসব লেখা নেই।
পৃথিবী নতুন ছবি আঁকতে থাকে। দৃশ্যাবলী একমাত্রিক ভাষ্য হয়ে ওঠে।

হে প্রিয় পিতামহ পিতামহী! বিস্তীর্ণ গাঙ্গেয় চরাচরে এক কোণে আমি বসে থাকি নির্লিপ্ত ভাবে এইসব দৃশ্য দেখি।