অবতক খবর,১৯ ফেব্রুয়ারি: দেশ বেচা তো চলছেই। রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি বেচে দিচ্ছে কেন্দ্র। রাজ্য ভাবছে কেন্দ্র যদি দেশ বেচে দিতে পারে আমরা তাহলে শিক্ষা ব্যবস্থাটা বেচে কিছু করে খেতেই পারি।‌ এখন রাজ্য শিক্ষা বেসরকারিকরণের রাস্তায় হাঁটছে।

জগাই মাধাই প্রসঙ্গটি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বারবার তোলেন। এখন নিজের আয়নায় চেহারা দেখলে বোঝা যাবে কে জগা আর কে মাধা! পশ্চিমবঙ্গের স্কুলগুলো বেসরকারি হাতে চলে যাচ্ছে। বলা হচ্ছে,পিপিপি মডেল। এই এক অদ্ভুত প্রকল্প এবং কৌশল। ইতিমধ্যে জুনিয়র হাই স্কুল ও অন্যান্য স্কুল মিলে ৭৯টি স্কুল উঠে গেছে। প্রশ্ন হলো, শিক্ষা যদি বাড়ে স্কুল বৃদ্ধির প্রবণতা তো বাড়বে, ‌কমবে কেন? প্রগতি কি নিচের দিকে যায় না ওপর দিকে ওঠে? যাই হোক বোঝা যাচ্ছে আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য,খেটে খাওয়া মানুষের জন্য শিক্ষার দায়িত্ব আর জনকল্যাণমূলক সরকার, মা-মাটি-মানুষের দল নিতে চাইছে না।

প্রকাশ হয়ে গেছে স্কুল বিল্ডিং এবং স্কুল সংলগ্ন বা স্কুলের অধীনে যে জমি তা বেসরকারি ওই এখন যাকে কর্পোরেট বলা হচ্ছে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।

 

অদ্ভুত এই কর্পোরেট শব্দটি। এর বাংলা করা হয়েছে উদ্যোগপতি। আমাদের ধ্যান ধারণায় এরা দুর্যোগপতি। পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ভেঙ্গে দেওয়ার চক্রান্ত শুরু হয়ে গেছে সরকারিভাবে।‌ফলত, শিক্ষা যে জাতির মেরুদন্ড, নাগরিক তৈরির প্রাথমিক প্রক্রিয়া তা বিপর্যস্ত হতে চলেছে এই মা-মাটি-মানুষের সরকারের আমলে।

 

আদানি বিদ্যামন্দির নামে একটি প্রকল্প হয়েছে। বিদ্যামন্দিরের আগে আদানি শব্দটি বসানো আছে। মূলত শিক্ষাব্যবস্থা এই গ্রুপের হাতে তুলে দেওয়া হবে। আসলে এটি আমদানি বিদ্যাপ্রকল্প।এই রাজ্য সরকার ভাষণে আদানি আম্বানির বিরুদ্ধে বলবে এবং তাদের পদেই আশ্রয় নেবে,তাদের হস্তচালনেই এই সরকার চলবে। পাড়ায় পাড়ায় শিক্ষালয় এই শব্দটির মধ্য দিয়েই হয়তো রাজ্য বোঝাতে চেয়েছিল শিক্ষা দরিদ্র পাড়ায় গরীব পাড়ায় শিক্ষা-লয় অর্থাৎ বিলুপ্ত হতে চলেছে। রবীন্দ্রনাথ কেবলমাত্র তো বিশ্বকবি ছিলেন না,আসলে ছিলেন তিনি দূরদ্রষ্টা, শিক্ষাবিদ। শিক্ষা প্রসারের চেষ্টা তিনি করেছিলেন। শিক্ষা প্রসারের চেষ্টা কে না করেছেন। বিদ্যাসাগর বর্ণপরিচয় তো লিখেছেনই,নারী শিক্ষা প্রচলনের জন্য নারী বিদ্যালয় স্থাপন করেছিলেন। শিক্ষার সঙ্গে বাংলার মনীষা জড়িয়ে আছে। সেই বাংলার সরকারই আজ সেই মনীষী যারা বাঙালিকে শিক্ষিত করতে চেয়েছিলেন,তাদের মুখকে আজ কালিমালিপ্ত করতে চাইছে।