রাজ্যসভার সাংসদ করতে চেয়েছিলেন মমতা, শুনে দল ছাড়তে চান অনুব্রত!

অবতক খবর,৩০ ডিসেম্বর: খোদ তৃণমূল নেত্রী তাঁকে সাংসদ হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তিনি রাজি হননি, উল্টে দল ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন! মঙ্গলবার দুর্গাপুরে একটি মেলার উদ্বোধনে এসে নেতা, মন্ত্রী বা সাংসদ পদের প্রতি তাঁর ‘অনাগ্রহ’-এর কথা বলতে গিয়ে এমনই দাবি করলেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত ওরফে কেষ্ট মণ্ডল।

এ দিন দুর্গাপুরের সিটি সেন্টার লাগোয়া পলাশডিহায় স্থানীয় একটি ক্লাব আয়োজিত ‘আদিবাসী মিলনমেলা’র সূচনা করেন অনুব্রত। সেখানেই তিনি বলেন, “আমি বিধায়ক, সাংসদ, মন্ত্রী নই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যসভার সাংসদ করতে চেয়েছিলেন। আমি বলেছিলাম, ‘দল ছেড়ে দেব।’ আমি বলেছিলাম, আমি সাধারণ মানুষের সঙ্গেই থাকতে চাই।” তবে তাঁর সংযোজন: “আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক জন সাধারণ সৈনিক। আমাকে মমতা যা করতে বলেন, আমি তা-ই করি। আমার কোনও লোভ নেই।”

এ দিকে, দুর্গাপুরের মেলায় যোগ দেওয়ার কারণ হিসাবে, সুনীল সোরেনের ‘আহ্বান’-এর কথাও বলেন অনুব্রত। ঘটনাচক্রে, গত ২৮ নভেম্বর তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন আদিবাসী নেতা সুনীল। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, ডেউচা-পাঁচামি কয়লা খনি চালু করার জন্য জমিদাতাদের যে ‘প্যাকেজ’ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে রাজ্য, তা নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে আলোচনার দায়িত্ব রয়েছে সুনীলের উপরে। এ দিন সে প্রসঙ্গও উঠে আসে অনুব্রতর মন্তব্যে। বলেন, “ডেউচা-পাঁচামিতে শিল্প হচ্ছে। সেখানে সুনীলকে আমি দায়িত্ব দিয়েছি।”

মেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন পুরসভার চেয়ারম্যান মৃগেন্দ্রনাথ পাল, ডেপুটি মেয়র অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। মেলা চলবে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। পাশাপাশি, ৯ অগস্ট আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস দুর্গাপুরে পালনের ব্যবস্থা করার জন্য পুরসভার কাছে আর্জি জানান অনুব্রত। তিনি আরও জানান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা হলে তিনি বিষয়টি তাঁকেও জানাবেন। পলাশডিহার ক্লাবটির উন্নয়নে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতিও দেন অনুব্রত।

তবে, অনুব্রতর মন্তব্য প্রসঙ্গে সরব হয়েছে বিরোধীরা। সিপিএমের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার বলেন, “ডেউচা-পাঁচামিতে সবই যদি সুষ্ঠু ভাবে হত, তা হলে বিরোধী দলগুলির প্রতিনিধিদের সেখানে যেতে বাধা দিতেন না অনুব্রত।” বিজেপির অন্যতম রাজ্য সম্পাদক লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের প্রতিক্রিয়া, “খনি তৈরি করতে গিয়ে সাধারণ মানুষকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। আর তাই, ওখানে অনুব্রতর নির্দেশে বিরোধীদের ‘প্রবেশ নিষেধ’ বোর্ড ঝোলানো হয়েছে।” তৃণমূল নেতা মৃগেন্দ্রনাথ অবশ্য বিরোধীদের এ সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।